বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি, সংহতি, অগ্রগতি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী ৫২তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আজ শেষ হয়েছে। আজ বেলা ১১টা ২ মিনিটে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বী ভারতের মাওলানা সাদ এই আখেরি মোনাজাত শুরু করে ১১টা ৩৬ মিনিটে শেষ করেন।
বহু কাঙ্খিত এই আখেরি মোনাজাতে লাখ লাখ ধর্ম প্রাণ মুসল্লী মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে রহমত ও হেদায়েত প্রার্থনা করেন।

দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি কামনা করে আখেরি মুনাজাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। আজ বাদ ফজর থেকে ইজতেমা ময়দান পুণ্যময় পরিবেশ বিরাজ করে। রাজধানীর উপকন্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণকারি লাখ- লাখ মুসল্লী নিজ-নিজ গুনাহ্ মাফ ও আত্মশুদ্ধি চেয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন।

বিশ্ব ইজতেমার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল বাসসকে জানান, ইজতেমা ময়দানে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণসহ দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লী বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। আজ রোববার বাদ ফজর থেকে আল্লাহ পাকের অশেষ মহিমায় আবেগ-আপ্লুত লাখো মুসল্লীর কণ্ঠে উচ্চারিত ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে তুরাগ তীর। অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে ইজতেমা ময়দানে আসেন মুসল্লীরা। বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনৈতিক মিশনের সদস্য ও পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।

প্রথম পর্বের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে বহির্বিশ্বের মুসল্লীসহ লাখো লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লী মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাতের আগে মাওলানা সাদ ঈমান ও আমলের ওপর বিভিন্ন হেদায়েতী বয়ান করেন। বিশ্ব ইজতেমা প্রথম দফায় তিন দিনব্যাপী মুসলিম বিশ্বের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েতের শেষ দিনে রোববার ভোর থেকেই আখেরি মোনাজাতে শামিল হতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইজতেমা ময়দানে আসেন। ট্রেন, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, জীপ, কার এবং নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে ইজতেমা ময়দানের দিকে ছুটে আসেন। মোনাজাত শুরুর আগেই সকাল ৯টার মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় তুরাগ তীরের পুরো ইজতেমাস্থল ও চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঢাকা থেকে বিশেষ বাস ও ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ইজতেমা স্থলে আসেন।

এদিকে জেলা প্রশাসন মোনাজাতে অংশ নিতে যাতে মুসল্লীদের সুবিধা হয় তার জন্যে আজমপুর, উত্তরাসহ আশপাশের প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশেষ মাইকের ব্যবস্থা করে। আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। আখেরি মোনাজাত ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।