উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতের প্রকোপ একটু বেশিই। তাই জেলার ৫ উপজেলায় সর্বদাই চলে শীতের প্রকোপ থেকে বাচাঁর নীরব প্রতিযোগিতা। কৃষিপ্রধান এ জেলায় নিজেদের পাশাপাশি নিজের গৃহপালিত পশু, এক টুকরো জমির প্রতি মানুষের টান চোখে পড়ার মতো।

ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় প্রচন্ড শীতের প্রকোপে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিকার হিসেবে এখানকার কৃষকেরা নিজেরাই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। বাড়িয়ে দিয়েছে পলিথিনের ব্যবহার।

শীতের হাত থেকে বীজতলা বাঁচাতে শক্তিশালী প্রতিশেধক ব্যবস্থা গ্রহণ করেও বীজতলা রক্ষা করা যাচ্ছে না। তাই শীতের আক্রমনে বীজতলা নষ্ট না হয় সেজন্য কৃষক পলিথিনকে উপযুক্ত প্রতিরোধক হিসেবে বেছে নিয়ে বেশ উপকৃত হচ্ছে।

ক্রমেই পলিথিনের চাহিদা বেড়ে গেছে ধান চাষীদের মাঝে। বীজতলার উপর পলিথিন বিছিয়ে দিলে চারার উপর শীত পড়তে পারেনা। ফলে শীতের ক্ষতিকারক দিক থেকে বেঁচে যায়।

কুয়াশায় এক ধরনের আঠাল পদার্থ থাকে। বীজতলার উপর পড়ার ফলে চারার সালোক সংশ্লেষন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। আঠাল পদার্থ সূর্যের রোদ পেলে তা ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে যাওয়ার ফলে চারাগুলো খাদ্য সংগ্রহ শক্তি হারিয়ে ফেলে। বেড়ে উঠতে পারেনা। পাতাগুলো হলদে রঙ ধারণ করে আস্তে আস্তে শুকিয়ে চারাগুলো মারা যায়।

পলিথিন প্রক্রিয়ায় কুয়াশা চারার উপর আক্রমন করতে পারেনা। ফলে বীজতলা কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখিন না হওয়ার কারণে এই বৃদ্ধি স্বাভাবিক থাকে। তাছাড়া পলিথিন প্রক্রিয়ায় বার বার কীটনাশক ও রোগ প্রতিশেধক প্রয়োগ করতে হয়না। কীটনাশক প্রক্রিয়াতে ততটা সুবিধাজনক ফলাফলও আসেনা। এ প্রক্রিয়ায় অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয় কৃষককে। আর উত্তম প্রতিরোধক হিসেবে বীজতলা বাঁচাতে কৃষকের কাছে পলিথিনের কদর বেড়েছে।

এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন