বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে না। আর খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো নির্বাচনও হবে না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনেই যদি বিএনপি নির্বাচনে যেত, তাহলে সেটা ২০১৪ সালেই যাওয়া যেত। পাঁচ বছর পরে কেন যাবে?শনিবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন গয়েশ্বর। জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান গয়েশ্বর।বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা প্রস্তাব করবেÑগণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে যদি নির্বাচনেই যাব, তাহলে ২০১৪ সালেই নির্বাচনে যেতে পারতাম। তাহলে পাঁচ বছর পরে যাব কেন?

গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পরিষদ এখনো বৈঠক করেনি। দলের মধ্যে নানা মতের মানুষ আছেন। পত্রিকার খবর নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে চান না। বিএনপি দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এখনো নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়নি।খালেদা জিয়ার জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে নাÑআওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাননি। আগামী নির্বাচনও ৫ জানুয়ারির মতো হলে সে নির্বাচনেও ভোটাররা যাবেন না। এ ধরনের নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যদি টিকে থাকতে চাইলে থাকুক। তবে খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এ দেশে হবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে সরকার। এটা উদ্দেশ্যবিহীন মামলা নয়। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য। বিএনপি এসব মামলা আদালতের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলা করবে।জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৩৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন তিনি।তখন গয়েশ্বর সাংবাদিকদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা দেওয়া হয়েছে, তা উদ্দেশ্যবিহীন মামলা নয়, এটা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করেছে।একই অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাগুলো প্রত্যাহার হলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলাগুলো সচল থাকাকে নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি হিসেবে দেখান তিনি।

গয়েশ্বর বলেন, সরকারি দল ও বিরোধী দলের ক্ষেত্রে আইনের দুই রকম প্রয়োগ হচ্ছে। বিরোধী দলের নেতা হলে জামিন পাই না, আমাদের জেলে যেতে হয়। আর একজন মন্ত্রী আছেন, তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্সে হাই কোর্টে রায় আছে, তারপরও স্বপদে বহাল আছেন।

বাঘাইছড়িতে শনিবার চলমান পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে গয়েশ্বর বলেন, আগের হাল যেদিকে যায়, পেছনের হাল তো সেদিকেই যায়। নতুন করে এই কমিশন থেকে আমরা কিছু প্রত্যাশা করি না।এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।