রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট এলাকায় নির্মাণাধীন উড়ালসড়কের (ফ্লাইওভার) গার্ডার পড়ে নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা গেছে।নিহত ব্যক্তির নাম মো. স্বপন (৪০)। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জে।মালিবাগ রেলগেট এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রেলগেটের কাছেই সততা ফার্নিচার নামের একটি দোকানে কাজ করতেন স্বপন।সততা ফার্নিচারের মালিক পরিচয় দেওয়া মো. কবিরের ভাষ্য, প্রায় দুই দশক ধরে তাঁর দোকানে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন স্বপন। তিন-চার দিন আগে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। রোববার সকালে ঢাকায় ফেরেন।কবিরের ভাষ্য, রাতে উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ চলার সময় লোকজন যাতে চলাচল করতে না পারে, তার জন্য চার ঘণ্টার চুক্তিতে কাজ করছিলেন স্বপন। প্রথমবার এই কাজ করেন তিনি। এর মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে।কবির জানান, ডিআইটি রোডের একটি বাসায় থাকতেন স্বপন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও তিন ছেলেশিশু রয়েছে।দিবাগত রাতে মালিবাগ রেলগেট এলাকায় নির্মাণাধীন উড়ালসড়কের গার্ডার পড়ে স্বপন নিহত হন। তাঁর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।

তা ছাড়া এ দুর্ঘটনায় পলাশ ও নুরুন্নবী নামের দুজন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।গার্ডার পড়ে হতাহতের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।রাজধানীর মালিবাগে মগবাজার ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে একজনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এছাড়া নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। সোমবার মালিবাগে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে রোববার রাতের অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা’র জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র জানান, ঘটনা তদন্তে এলজিইডির অতিরিক্ত তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান সাঈদ খোকন।তবে কমিটি কতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কিংবা ক্ষতিপূরণের পরিমাণ সম্পর্কে কিছু জানাননি মেয়র।

রোববার রাত সোয়া ২টার দিকে মালিবাগ রেলগেইট এলাকায় নির্মাণাধীন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে একজনের মৃত্যু হয়;আহত হন দুইজন।স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর পক্ষে দুর্ঘটনাস্থল দেখতে এসেছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক থাকায় এখানে তিনি আসতে পারেননি। তার প্রতিনিধি হিসেবে আমি এখানে এসেছি। এ ধরনের ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত এবং অনভিপ্রেত। এ বিষয়ে আমি মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। মাননীয় মন্ত্রী এ ঘটনায় ক্ষোভ এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানান সাঈদ খোকন।তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষী ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। কাউকে এক বিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।এ ঘটনায় হতাহতদের সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “যে নিহত হয়েছে তার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ চলার সময় আশপাশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কি না এমন প্রশ্নে সাঈদ খোকন জানান, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর তাকে জানিয়েছেন প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা পর্যাপ্ত ছিল।এটা হঠাৎ করেই ঘটে গেছে। এটা কারও কাম্য নয়। যে মারা গিয়েছেন, তিনি একজন হোটেল কর্মী। দুর্ভাগ্যক্রমে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।