চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে নৌকা ডুবির ঘটনায় রোবাবার থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে দুইজন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের মরদেহ রয়েছে।গেলো রোববার সন্ধ্যায় সীতাকুন্ডের কমিরা ঘাট থেকে সী টেক’এ করে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে লাল বোট দিয়ে ঘাট পার হওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটে।নৌকা ডুবি থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া রহমতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো আকবর হোসেন ওমান দেশে সন্দ্বীপের গ্রামের বাড়ি আসছিলেন। তাকে বরণ করে নিতে বড় ভাই শিক্ষক নুরুল হুদা গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরে।

দীর্ঘ তিন ঘন্টা নদীর ঢেউয়ের সাথে জীবনযুদ্ধ করে সমস্ত মালমাল যাওয়ার পর তিনি জানিয়েছেন, গেলো বুধবার বড় সন্তান পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়। সন্তান হারানো বেদনায় সে ভারাক্রান্ত হয়ে দেশে এসেছে। কিন্ত বিমান বন্দর থেকে গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপ আসতে ঘাটে আসেন আকবর হোসেন ও তার বড় ভাই মাষ্টার নুরুল হুদা। কিভাবে লাল বোট উল্টে গেল তার বর্ণনা দিয়ে আকবর বলেন, কুমিরা ঘাট থেকে প্রথমে লাল বোট দিয়ে এস এম শহীদ সালাম সী টেক’ এ উঠেন। বিদেশ থেকে আনা সমস্ত মালামাল নিয়ে। বৌরি আবহাওয়া থাকার পরও সী টেকটি অভিজ্ঞ চালক ছাড়া এ্যাসেসটেন্ট দিয়ে চালানো হয়। সী টেশটিতে ৪শ এর অধিক যাত্রী দিয়ে বৌরি আবহাওয়ার মধ্যে নিষিদ্ধ সময়ে ছাড়ানো হয়।

দুই ঘন্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে সী টাকটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে আসে। রাতের অন্ধকারে সী টেক থেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে ৬০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে লাল বোটে উঠেন । লাল বোটে ওঠার পর দশ টাকা করে বোট ভাড়া দেওয়ার জন্য যাত্রীদের বলা হওয়ার পর পর সী টাকের সাথে লাল বোটটি দুই-তিন বার ধাক্কা লাগে। তারপর ৬০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে লাল বোটটি মালামাল নিয়ে ডুবে যায়।

আকবর হোসেন আরো বলেন, দীর্ঘ তিন ঘন্টা ঢেউয়ে সাথে যুদ্ধ করে প্রাণ বাঁচান। তার ঘন্টা দু-এক পর বড় ভাই নুরুল হুদা মাষ্টারও সাঁতরায়ে ঘাটে ওঠেন। ওমানের ভিসা, আইডি, পাসর্পোট ও বাড়ির জন্য আনা সমস্ত মালামাল হারিয়ে নিজের ও বড় ভাইয়ের জীবন বাচাঁতে পেরে পরিবারের কাছে ফিরে যান তারা। তার অভিযোগ দশ টাকার জন্য জিম্মা করে ১৫ জন মৃত্যু হয়েছে। আরো ৩২ জন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন।নৌকা দুর্ঘটনার পর ৩২ জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন । ঘটনার একদিনপর নৌবাহিনীর ডুবুরি দশ আসলেও তারা উদ্ধার কাছে তেমন সহযোগীতা করেনি। পুলিশ ও কোষ্টগার্ডও উদ্ধার কাছে তেমন সহযোগীতা করেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসন যদি উদ্ধার কাজে সহযোগীতা করতো তাহলে লাশের গন্ধে সন্দ্বীপের বাতাস ভারি হতো না।

সন্দ্বীপ থানার ওসি (তদন্ত) বিজন বড়–য়া বলেন, মৃত ১৫ জন হলেন, মো. সালাউদ্দিন(৩০),বরদা জলদাশ(৬০), সচিন্দ্রা জলদাশ(৫০), আব্দুল হক(৬০), হাফেজ আমিন রসুল(৪৫), হাফেজ উল্লাহ(৪৫),শামসুল আলম(৪০), মাঈন উদ্দিন(৩০), কামরুজ্জামান (৩০), নিজাম উদ্দিন(২৫), তানবির আহমেদ জোবায়ের (২০), শিক্ষক ওসমান গনি(৫০), শিক্ষক ইউসুফ আলম, মাকসুদুর রহমান(৩২) এবং অজ্ঞাত ব্যক্তি।

এছাড়া আরো নিখোজ রয়েছেন প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন শিপন,তাসিন(৭), নীহা, রাবেয়া আক্তার,সামান্দা ছাড়া আরো কয়েকজন।