দুদকের এক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু।ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লা রোববার শুনানি করে তার জামিন মঞ্জুর করেন।দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ১২ এপ্রিল এ আদালতই ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছিল।কয়েক ডজন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত নয় বছর ধরে পরিবারসহ লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক।তার শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু রোববার সকালে আত্মসমর্পণের জন্য আদালতে আসেন অ্যাম্বুলেন্সে করে।

আত্মসমর্পণের সময় আসামির এজলাসে উপস্থিতির নিয়ম থাকলেও ইকবাল মান্দ বানু আদালত ভবনের নিচে অ্যাম্বুলেন্সেই অবস্থান করেন।তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী জামিনের আবেদন করে আদালতকে বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি আত্মসমর্পণের জন্য উপরে উঠতে পারেননি।পরে আদালতের নির্দেশে দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম নিচে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ইকবাল মান্দ বানুকে দেখে আসেন এবং তার বক্তব্য শুনে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।এ জে মোহাম্মদ আলী ছাড়াও মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও সানউল্লাহ মিয়াসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন শুনানিতে।

ইকবাল মান্দ বানু সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের স্ত্রী। তাদের মেয়ে জোবাইদা খানের সঙ্গে ১৯৯৩ সালে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের বিয়ে হয়।জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৯ মে তারেক রহমানের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস দেয় দুদক। এরপর ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় দায়ের করা ওই মামলায় তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়। অবৈধ সম্পদ অর্জনে তারেক রহমানকে সহায়তা এবং তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।ওই মামলার অনুসন্ধান চলাকালে ইকবাল মান্দ বানুর নামে- বেনামে ‘বিপুল পরিমাণ সম্পদ থাকার তথ্য পেয়ে’ তার সম্পদের হিসাব চেয়ে ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি আলাদা নোটিস পাঠায় দুদক।এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী না দেওয়ায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক আর কে মজুমদার ঢাকার রমনা থানায় এ মামলা দায়ের করেন।দুদকের উপ-পরিচালক আবদুস সাত্তার সরকার তদন্ত শেষে গতবছর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন।এর বিরুদ্ধে রিট আবেদন নিয়ে উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন তারেকের শাশুড়ি। কিন্তু হাই কোর্ট তা খারিজ করে দিলে মামলার কার্যক্রম চলার বাধা কাটে। অপরাধ প্রমাণিত হলে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারা অনুযায়ী এ মামলায় তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হতে পারে।