জঙ্গী, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজ নির্মূলে গাজীপুরে শনিবার চিরুনী অভিযান শুরু করেছে জেলা পুলিশের ৫শতাধিক সদস্য। রাজধানীর সন্নিকটে জয়দেবপুর থানা এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে এ অভিযান একযোগে শুরু করা হয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত একটানা এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ অভিযান শুরুর আগে দুপুরে গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইনে সাংবাদিকদের জানান, রাজধানীর পাশে থাকায় গাজীপুরের শিল্প শহর জয়দেবপুর থানা এলাকায় জঙ্গী সংগঠনের নেতা-কমী, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামিরা অবস্থান করতে পারে এমন আশঙ্কায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জয়দেবপুর থানা এলাকার ৯টি ওয়ার্ডকে ৪৫ভাগে বিভক্ত হয়ে ৫শতাধিক পুলিশ দুপুর তিনটার দিকে একযোগে অভিযান শুরু করে। অভিযানকালে পুলিশ সদস্যরা এলাকার প্রতিটি বাড়িতে যাবে। বাড়ির মালিকদের সহযোগিতায় ভাড়াটিয়াদের ফ্ল্যাট বা কক্ষে তল্লাশি চালাবে। যেসব বাড়িতে বাড়িওয়ালাদের পাওয়া যাবে না সেসব বাড়িতে পুলিশ সরাসরি প্রবেশ করবে। এসব এলাকার যেসব বাড়িতে বাড়ির মালিকরা থাকেন না সেখানে কারা, কতদিন ধরে অবস্থান করছেন, তাদের পেশা কি এবং কখন বাড়িতে যাওয়া আসা করেন এসব বিষয় মাথায় রেখে একযোগে তল্লাশী অভিযান চালানো হবে এবং তথ্য সংগ্রহ করবে। এছাড়া এ সময় বাড়ির মালিকদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে লিফলেট এবং ভাড়াটেদের তথ্য ফরম বিতরণ করেন। এ অভিযান পর্যায়ক্রমে পুরো জেলায় অব্যহত থাকবে।

পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ আরো বলেন, রাজধানী সংলগ্ন গাজীপুর শিল্প এলাকা হওয়ায় এ জেলার জয়দেবপুর থানা এলাকায় হাজার হাজার বাড়িতে লাখ লাখ মানুষ বসবাস করেন। প্রতিদিন এখান থেকে অগনিত মানুষ রাজধানীতে প্রবেশ করেন। রাজধানীর কাছের নগরী হওয়ায় অপরাধীরা গাজীপুরে আশ্রয় নিয়ে থাকে নিরাপদ ভাবে। ইতোপূর্বে টঙ্গী থেকে হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এছাড়া আরো বিভিন্ন অভিযানে ইতিপূর্বে টঙ্গী থেকে অনেক জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। এই জেলায় ৬টি জেলখানা রয়েছে। অপরাধীরা অপরাধ করে এসব জেলখানার আশপাশে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়ে থাকে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সুলাইমান জানান, জঙ্গী, সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজ নির্মূলে পুলিশের এ চিরুনী অভিযান জয়দেবপুর থানা এলাকায় চলছে। জেলার ৬জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৩জনসহ সহকারি পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ৫শতাধিক পুলিশ গাজীপুর সিটির ৯টি ওয়ার্ডের ৪৫টি স্পটে একযোগে অভিযান শুরু করা হয়। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ পুরো অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং মনিটনিং করছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ এপ্রিল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী মডেল থানা এলাকায় চিরুনী অভিযান চালায় পুলিশ। ওই অভিযানকালে টঙ্গীর বনমালা রোড ও আরিচপুর এলাকা থেকে দুই নারীসহ ১০ জনকে বিপুল সংখ্যক জিহাদী বই ও লিফলেট, তিনটি দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করেছে পুলিশ।