সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সইয়ের আটমাস পর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ফিরেছেন প্রবীণ যুদ্ধবাজ নেতা গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার।হেকমতিয়ার ‘কাবুলের কসাই’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ইসলামপন্থি এ নেতার বিরুদ্ধে নৃশংসতার বহু অভিযোগ রয়েছে। তিনি আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম সশস্ত্র দল হেজব-ই-ইসলামির নেতা।১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত-বিরোধী কমান্ডার হিসেবে তিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন। ১৯৯০ এর দশকে গৃহযুদ্ধের সময় কাবুলে হাজারো মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ১৯৯৬ সালে তালেবানরা কাবুল দখলের পর পালিয়ে যাওয়া হেকমতিয়ার প্রায় ২০ বছর পর সেখানে ফিরলেন।হেজব-ই-ইসলামির সঙ্গে আফগান সরকারের শান্তিচুক্তি সইয়ের ফলে বছরের পর বছর ধরে পলাতক থাকা হেকমতিয়ারের জন্য রাজনৈতিকভাবে আফগানিস্তানে ফেরার সুযোগ তৈরি হয়।

শান্তিচুক্তির আওতায় হেকমতিয়ার সংবিধান মেনে নেওয়া এবং সহিংসতা পরিহারে রাজি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাকে জালালাবাদ থেকে কড়া নিরাপত্তায় আফগান সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে কাবুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।কাবুলে হেকমতিয়ার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর শুক্রবার বিখ্যাত মসজিদে জুমার নামাজ পড়াবেন।সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেকমতিয়ারকে আধুনিক আফগান ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত ব্যক্তি হিসাবেই দেখা হয়। তার সঙ্গে সরকারের শান্তিচুক্তিকে অনেকেই আফগানিস্তানের জন্য একধাপ অগ্রগামী পদক্ষেপ হিসাবে দেখছেন। আবার অনেকে মনে করছেন এ চুক্তি সরকারে বিভক্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।সমালোচকরা বলছেন, তালেবানরা তার ডাকে সাড়া নাও দিতে পারে। তাছাড়া, তিনি দেশে ক্ষমতার লড়াইয়ে আরেকজন রাজনৈতিক খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারেন।কিন্তু সরকার হেকমতিয়ারের সঙ্গে চুক্তিকে সাফল্য হিসাবেই দেখছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের আশা, হেকমতিয়ারের অধীনে একসময় কাজ করা তালেবান কমান্ডাররা তার কথা শুনবে। হেকমতিয়ার ওই তালেবান কমান্ডারদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে তালেবান গোষ্ঠীকে সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে আনতে পারবেন।যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ২০০৩ সালে হেকমতিয়ারকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করে। তার সঙ্গে তালেবান ও আল-কায়েদার সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ করে তারা। অনেকেই মনে করেন, ওই সময় হেজব-ই-ইসলামির নৃশংসতার কারণেই আফগানরা তালেবানদের ক্ষমতাগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছিল। এ গৃহযুদ্ধই হেকমতিয়ারে পতন ডেকে এনেছিল।