এবার আন্ধারমানিক নদী দখলে নেমেছে দখলবাজচক্র। ইলিশের দীর্ঘ অভয়াশ্রম এবং কলাপাড়ার প্রাণখ্যাত এ নদীতীরসহ মূলনদী দখল করে একেক করে স্থাপনা তোলার কাজ ছলছে। আরসিসি পিলার করে পাকা এসব স্থাপনা তোলা হচ্ছে। ওইসব পিলার স্থাপন করা স্পটে জোয়ারে মাথা সমান পানিতে তলিয়ে যায়। ভূমিগ্রাসি এক শ্রেণির প্রভাবশালীচক্র বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তুলছে। ফলে দেশের মধ্যে গুরুত্বপুর্ন এ নদী এখন দখলের শঙ্কায় পড়েছে।

দীর্ঘ ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে এনদীটি এমনিতেই প্রাকৃতিক কারণে পলি পড়ে চর জেগে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দরকার পুনর্খনন। সেখানে উল্টো দখল দৌরাত্মে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। এখন এই দখল প্রক্রিয়া প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যা অপসারন করে নদীর স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা সম্ভব। পরবর্তীতে দখলে সয়লাব হলে এ নদী রক্ষা প্রক্রিয়া জটিল হয়ে যাবে বলে অভিজ্ঞমহলের অভিমত। সবচেয়ে বেশি দখলের কবলে পড়েছে কলাপাড়া পৌরশহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন আশপাশ এলাকা। সেখানে কিছু স্থাপনা নদীর মধ্যে পর্যন্ত দখল করে তোলা হয়েছে। এসব স্থাপনা তোলার কাজে স্থানীয় ভূমি প্রশাসন বাধা দেয়। তখন দুই-চারদিন কাজ করা বন্ধ থাকে।

আবার চলে স্থাপনা তোলার কাজ। উপজেলা পর্যায়ে নদী রক্ষা কমিটি রয়েছে। কিন্তু তারা কার্যকর কোন বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে দখলদাররা সুযোগ পেলেই দখলের কাজে নেমে পড়ে। পরিবেশ সচেতনদের দাবি এসব দখলদারদের স্থাপনা অপসারন করে প্রয়োজন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, আন্ধারমানিক নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। এ নদী একই সাথে ঐতিহ্যবাহী রামনাবাদ নদীও বঙ্গোপসাগরের সাথে সরাসরি যুক্ত। ৪৫ কিলোমিটার ডিম্বাকৃতির নদীটির জীববৈচিত্রতা ও মৎস্যসম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার নবেম্বর থেকে জানুযারি পর্যন্ত অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছেন। মৎস্যকুল, বিশেষ করে ইলিশ রক্ষার্থে নদীটির স্বাভাবিক পানির প্রবাহ ধরে রাখা জরুরি। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল চন্দ্র দাস জানান, নদীর দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। দখলের কোন সুযোগ নেই। তবে এক্ষেত্রে সচেতন সকলের এগিয়ে আসতে হবে বলেও তিনি মতামত ব্যক্ত করেন। উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সাদিকুর রহমান জানান, নদী দখলের কোন সুযোগ নেই। সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।