ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে সংসদের বিরোধী দল লেবার পার্টির যোজন যোজন ব্যবধান ক্রমাগত কমে আসছে। বেসরকারী জরিপ সংস্থা ইউগভ-এর এক সাম্প্রতিক জরিপে এমন আভাস পাওয়া গেছে। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, থেরেসা মে’র কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মাত্র তিন পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে জেরেমি করবিনের লেবার পার্টি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেট ইউগভ সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে।জরিপে আরও দেখা যায় করবিনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মে’র জনপ্রিয়তাও কমছে। ৩০ শতাংশ নাগরিক মনে করেন করবিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভালো করবেন। আর ৪৩ শতাংশ ব্রিটিশদের মত মে’র পক্ষে। আগে যা ছিলো ৪৫ শতাংশ।ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত কয়েক সপ্তাহে কনজারভেটিভরা আগের অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। তাদের পয়েন্ট এখন ৪২। বিপরীতে ৩ পয়েন্টর ব্যবধান নিয়ে লেবার পার্টির পয়েন্ট ৩৯। গত এপ্রিলে লেবার পার্টির চেয়ে ২৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল কনজারভেটিভরা।গত সপ্তাহে পরিচালিত পৃথক জরিপেও দেখা গিয়েছিল, আগাম নির্বাচনে বেশ বড় জয় পেতে যাচ্ছেন থেরেসা।

তবে পরিস্থিতি বদলে যায় সোমবার। ওইদিন টেলিভিশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সাত বছর ধরে চলা নানা কল্যাণমূলক সেবা বাতিল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বাজেট কর্তন এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্র“তি পূরণে ব্যর্থতার প্রশ্নে দর্শকদের জবাব দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন থেরেসা। তবে বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন সমাজকে বদলে দেয়ার বিকল্প প্রস্তাবে দর্শকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন।৫০ হাজার লোকের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি জরিপ প্রতিবেদনে ইউগভ জানিয়েছে, ২০১৫ সালের নির্বাচনে পূর্বসূরি ডেভিড ক্যামেরন পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৩৩১টিতে জিতেছিলেন। তবে এবার থেরেসা মে ২০টি আসন খোয়াতে পারেন। অপরদিকে, লেবার পার্টি গতবারের চেয়ে এগিয়ে ২৫৭টিতে জয় পেতে পারে। গতবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি ২৩২টি আসনে জিতেছিল। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ও নর্দান আইরিশ পার্টি ৮৩ আসনে জয় পায়। থেরেসা মে অবশ্য সমর্থন ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দলের নির্বাচনী ইশতেহারে কিছুটা পরিবর্তন আনায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে তার। দলটি জানায়, বয়োজেষ্ঠ্য যেসব ব্যক্তিদের যতœ প্রয়োজন তারা বাড়িতে টাকা না দিয়ে আমৃত্যু থাকার ব্যবস্থা করবে কনজারভেটিভরা। তবে এর সমালোচনা করে বিশ্লেষকরা বলেন, এই আইনে ডিমেনশিয়ার মতো রোগে যারা ধীরে ধীরে মৃত্যুবরণ করেন তারা দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঢলে যাওয়ার নাগরিকদের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন।এছাড়া টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে না চাওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েন থেরেসা মে। এক বিতর্কে গ্রিন পার্টির নেতা ক্যারোলিন লুকাস বলেন, আপনি সাধারণ নির্বাচন ডেকে বলবেন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এই বিষয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করবেন না, সেটা হয় না। আমি মনে করি এটাই নেতৃত্বের প্রথম ধাপ।বৃহস্পতিবার ব্রেক্সিট ইস্যুতে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে মে’র। ব্রিটেনের ভালোর জন্য ব্রেক্সিটের প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবেন তিনি। এই ব্রেক্সিট নিয়েই করবিনকে বেশ কয়েকবার আক্রমণ করেছের তিনি।