সরকার বাজেটকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে আগামী অর্থবছরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কী পরিমাণ বরাদ্ধ দেওয়া হয় দেখতে চায় বিএনপি।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেলা দেড়টায় জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করতে যাওয়ার মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুঃস্থ নারীদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার সামনে নির্বাচনকে রেখে রাজনৈতিকভাবে বাজেটকে ব্যবহার করছে। কোন কোন খাতে এর ব্যবহার হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা ভালো না, শিক্ষা খাতের অবস্থা ভালো না। সেগুলোর জন্য আমরা দেখতে চাই, ওইসব খাতে কী রকম বরাদ্ধ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ওইসব খাতের অবস্থা ভালো নয়। সেই কারণে আমরা মনে করি এই বাজেটটি জনগণের কল্যাণে খুব একটা কিছু করতে পারবে না।

বাজেট ঘোষণার আগে তাতে জনগণের কল্যাণ কতটুকু হবে সে বিষয়ে ‘যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে সরকারের বাজেট দেওয়ার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন বিগত নির্বাচন বর্জন করে দশম জাতীয় সংসদ থেকে ছিটকে পড়া বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল।পত্র-পত্রিকায় আমরা দেখেছি, অর্থনীতিবিদরা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো তারা এই বাজেটের যে বিশাল একটা অবয়ব, যেটা এই সরকার বরাবরই বড় অবয়ব দিচ্ছে, বড় একটা বাজেট দিচ্ছে, যেটা সব সময় বলা হচ্ছেৃ ইট ইজ হাইলি অ্যামবিশাসএবার বলা হচ্ছে যে, ঝুঁকি নিয়ে দেওয়া হচ্ছেৃ অর্থমন্ত্রী নিজেই বলছেন যে শেষ বাজেট ঝুঁকি নিয়ে দিচ্ছেন। ভালো কথা। যারা বাজেট দিচ্ছে, তাদের সেই বৈধ্তা আছে কিনা। বৈধতা নেই বলেই আজকে আর্থিক ক্ষেত্রে যত সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।অতীতের বাজেট বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন, ব্যাংকিং সিস্টেম, শেয়ার মার্কেট এবং এডিবির (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) যে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, সেটাও কিন্তু চূড়ান্তভাবে হচ্ছে না।কয়েকদিন আগে আমরা পত্রিকায় দেখেছি, গতবছরের বাজেটের ৫৫ পার্সেন্ট থেকে ৬০ পার্সেন্ট এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। তাহলে এই বড় বাজেট দেওয়ার যুক্তিটা কী থাকতে পারে?বাজেটের লক্ষ্যের মধ্যে জনকল্যাণের বিষয়টি নেই বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, এই বাজেটের লক্ষ্যটা কী? লক্ষ্যটা এমন হতো জনগণের কল্যাণের জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধির জন্য তাহলে একটা কথা ছিল। আমরা দেখছি যে, ভ্যাটের (মূল্য সংযোজন কর) মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নেওয়া হচ্ছে এবং অনুৎপাদক খাতে ব্যয় বেশি হচ্ছে।একই সঙ্গে পাওয়ার প্ল্যান্টের ক্ষেত্রে দুর্নীতি চরম পর্যায় চলে গেছে এবং কোনো জবাবদিহিতা নেই, কোনো টেন্ডার হয় না- এই বিষয়গুলো রয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করি, আমাদের দেশের আর্থিক যে নিয়ন্ত্রণ বা আর্থিক যে ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে।আসছে বাজেটও বিশাল ঘাটতি থাকবে, সেক্ষেত্রে জনকল্যাণ কতটুকু সম্ভব হবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, খুব কঠিন এটা। এটা শুধু কঠিন নয়, অসম্ভব ব্যাপার।নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচেরতলায় মহিলা দলের উদ্যোগে দুঃস্থ মহিলাদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল।এ সময় মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নূরে আরা সাফাসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।