আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশ। এ গ্র“পে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩’শতাধিক রান করে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে হারের লজ্জা পায় টাইগাররা। তাই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অসিদের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই বাংলাদেশের সামনে। প্রথম ম্যাচের ভেন্যু কেনিংটন ওভালেই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। দিবা-রাত্রির ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়।দুর্দান্ত শুরুর লক্ষ্য নিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। সেই পথ তৈরিও করে ফেলেছিলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামাটা অপছন্দ হয়নি তামিমের। তাই ইংলিশদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে রানের ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছেন তিনি। তার মত ব্যাট হাতে রানের পসরা সাজিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমও। যে কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় সংগ্রহের ভাল সুযোগ পায় বাংলাদেশ।

কিন্তু তামিম ১৪২ বলে ১২৮ ও মুশফিকুর ৭২ বলে ৭৯ রানে ফিরে যাবার পর শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশকে রানের পাহাড়ে বসাতে পারেননি। ৪৪ দশমিক ৪ ওভারে দলকে ২৬১ রানে রেখে ফিরেন তামিম-মুশফিকুর। তৃতীয় উইকেটে এ জুটির রান ছিল ১৫১ বলে ১৬৬। কিন্তু তাদের বিদায়ের পর শেষ ৩৪ বলে ৪৪ রান যোগ করে ৬ উইকেটে ৩০৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।জবাবে জো রুটের অপরাজিত ১৩৩, অ্যালেক্স হেলসের ৯৫ ও অধিনায়ক ইয়োইন মরগানের অপরাজিত ৭৫ রানের সুবাদে ১৬ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে ইংল্যান্ড।৩০৫ রান করে ম্যাচ হারের কারণ হিসেবে আরও কিছু রান কম থাকাকেই চিহ্নিত বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ‘আমার মনে হয় ৩০৫ রানের পরও আমাদের আরও কিছু রান কম ছিলো। আমাদের হাতে যখন বেশক’টি উইকেট ছিলো তখন আমাদের আরও ভালো করার প্রয়োজন ছিলো। ইংলিশদের কাছে হেরে যাওয়ায় র‌্যাংকিং-এ ষষ্ঠ স্থান থেকে সপ্তম স্থানে নেমে যেতে হয় বাংলাদেশকে। অবশ্য গত রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে শ্রীলংকা হেরে যাওয়ায় আবারো ষষ্ঠ স্থানেই বাংলাদেশ।

তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। হেরে গেলেই টুর্নামেন্ট থেকে টাইগারদের বিদায় অনেকাংশেই নিশ্চিত হয়ে যাবে।অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়ার জন্যও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নিজেদের প্রথম ম্যাচ থেকে ১টি পয়েন্ট পেয়েছে তারা। বৃষ্টির কারনে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছিলো। তবে হারের মুখ থেকে রক্ষা পায় অসিরা। বৃষ্টি বিঘিœত ৪৬ ওভারের ম্যাচে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ১০০ রানের সুবাদে ৬ বল হাতে রেখে ২৯১ রানের বড় সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। এরপর বৃষ্টি কারণে ৩৩ ওভারে ২৩৫ রানের নতুন টার্গেট পায় অস্ট্রেলিয়া। সেই লক্ষ্যে ৯ ওভার ব্যাট করে ৫৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে অসিরা। পরবর্তীতে বৃষ্টির কারণে আর খেলা না হলে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

এ জন্য বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিকে অনেক গুরুত্ব নিয়েই দেখছেন অস্ট্রেলিয়া ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার, আমাদের আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। সামনে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতেই মাঠে নামবো আমার।অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। ১৯ বারের মুখোমুখিতে এখন পর্যন্ত ১টি জয় পেয়েছে টাইগাররা। তবে এই একটি জয় থেকেই আত্মবিশ্বাসের ফুয়েল বাড়িয়ে নেয়ার রসদ কিন্তু আছে। কারণ একমাত্র জয়ের স্বাদটি এই ইংল্যান্ডের মাটিতে পেয়েছিল বাংলাদেশ।২০০৫ সালে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পায় বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৪৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর মোহাম্মদ আশরাফুলের দৃষ্টিনন্দন ১০০ রানের উপর ভর করে অসিদের বিপক্ষে অবিস্মরনীয় জয়ের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ।তাই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ইংল্যান্ডের মাটিতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় জয় বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ানডেতে সর্বশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে দেখা হয়েছিলো বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার। অবশ্য বৃষ্টির কারণে ব্যাট-বলের লড়াই মাঠে করতেই পারেনি দু’দল। পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ায় সেবারও উপকার হয়েছিলো বাংলাদেশেরই।