গাজীপুরের শ্রীপুরে গজারী বনে রেল লাইনের পাশ থেকে সোমবার এক কলেজ ছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের রেজাউল করিম (১৮)। সে জামালপুর জেলার মেলান্দহ থানার হরিপুর মোঃ জহির উদ্দিনের ছেলে এবং মেলান্দহ সরকারী কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র।

রেলওয়ে পুলিশের টঙ্গী জংশন রেলষ্টেশন ফাঁড়ির এএসআই দেলোয়ার হোসেন জানান, গাজীপুরে শ্রীপুরের ইজ্জতপুর রেলষ্টেশনের পাশর্^বর্তী বিন্দুবাড়ি তেতুলতলার গজারীবন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের পাশে (১০৪ নং রেলব্রীজের দক্ষিণে) ক্ষতবিক্ষত এক কিশোরের অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসি। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নিহতের মাথার পেছনে, ডান কাঁধ, পা ও মুখসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রেললাইন সংলগ্ন গাছের ডালপালার আঘাতে বা অন্য কোন কারনে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। অন্ততঃ তিনদিন আগে তার মৃত্যু হওয়ায় লাশে পচন ধরেছে। লাশের সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে জামালপুরের মেলান্দহ সরকারী কলেজের একটি পরিচয় পত্র ও ট্রেনের ৩ জুন তারিখের একটি টিকিট পাওয়া গেছে। পরিচয়পত্র থেকে নিহতের নাম রেজাউল করিম বলে জানা গেছে। এছাড়া তার কাছ থেকে প্রাপ্ত টিকিট থেকে জানা যায়, সে গত ৩ জুন বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গী রেল ষ্টেশন থেকে জামালপুর কমিউটার ট্রেনে চড়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ যাচ্ছিল।

নিহতের বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক ও স্বজনরা জানান, গত কিছুদিন আগে কলেজে অনুষ্ঠিত প্রথমবর্ষ সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয় রেজাউল। দু’ভাই ও এক বোনের মধ্যে রেজাউল দ্বিতীয়। পরীক্ষা শেষে কলেজ ছুটির ফাঁকে মোবাইল ফোন মেরামতের কাজ শিখতে রেজাউল গত ২৭ মে গাজীপুরের গাজীপুরা এলাকায় তার বড় ভাইয়ের বাসায় আসে। সেখানে একটি দোকানে কিছুদিন কাজ শিখে সে। সে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তির উদ্দেশ্যে গত শনিবার (৩জুন) বিকেলে ভাইয়ের বাসা থেকে রওনা হয়ে টঙ্গী রেল ষ্টেশন হতে ট্রেনে চড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে নিখোঁজ হয়। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্নস্থানে তার খোঁজ করা হলেও সন্ধান মিলে নি। অবশেষে সোমবার বিকেলে রেজাউলের লাশ উদ্ধার হওয়ার খবর পেয়ে স্বজনরা কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে ছুটে যান। নিহতের বড় ভাই রাজ্জাক গাজীপুরের গাজীপুরা এলাকার ট্রাউজার ওয়াল প্রাইভেট লিমিটেড কারখানার সিকিউরিটি গার্ড।