প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে বাতিল হওয়া অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদের নিয়োগ পরীক্ষা আজ শুক্রবার আবার নেওয়া হয়েছে। গুজব উঠলেও এবার আর প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সত্যতা মেলেনি। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষাটি হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিক শিক্ষার্থী কাছে হাতে লেখা ১০০টি উত্তর পাঠান। তাঁরা অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এগুলো ছড়াচ্ছে। তবে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এর কোনো ভিত্তি নেই। পরীক্ষা শেষেও দেখা যায় এগুলো ভুয়া।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও পরীক্ষা গ্রহণ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম নিজেই বিষয়টি তদারকি করেন।জানতে চাইলে শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সকালে বলেন, আমি এবার নিজেই পুরো প্রক্রিয়ায় ছিলাম। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁস স্থায়ীভাবে বন্ধ করা দরকার। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দরকার, যাতে প্রশ্নপত্র রেডি করে পেন ড্রাইভে দিলে ছাপা হয়ে বেরোবে। এতে ছাপা বা বাঁধাইয়ের কাজে বাইরের লোক থাকে না বলে ফাঁস হওয়ার সুযোগ নেই। এই যন্ত্রটি কেনা গেলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া বন্ধ করা সম্ভব।

গত ১৯ মে অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের বাছাইপর্বের পরীক্ষা ছিল। ২৬২টি পদের বিপরীতে দুই লাখের বেশি পরীক্ষার্থী থাকায় সকাল-বিকেল দুই ভাগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সকাল ভাগের পরীক্ষা হয়। আরেক ভাগের পরীক্ষা ছিল বেলা সাড়ে তিনটায়। প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে প্রথমে বিকেলের পরীক্ষা এবং পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সকালের পরীক্ষাও বাতিল করা হয়।এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। গত ২১ এপ্রিল ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষা বাতিল না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আদালতে যান। আদালত তিন মাসের জন্য ফল প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ পরে আদেশে স্থগিতাদেশ চাইলেও আদালত আগের আদেশ বহাল রাখেন।কয়েক বছর আগেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। এসব বন্ধ করে স্বচ্ছতা আনতে এবং একই মান রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চেয়ারম্যান করে ২০১৫ সালের শেষে গঠিত হয় ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি)।এরপর গত বছর সোনালী, জনতা, অগ্রণী, কৃষি, রূপালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৭ হাজার পদের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এতে আবেদন পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ। এখন এসব পরীক্ষা চলছে। অবশ্য এই দীর্ঘসূত্রতা নিয়েও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।