একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ সফরে গিয়ে দলগুলো চাইত বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করুক। খেলাটা যাতে আগে শেষ হয়ে যায়। কী দারুণভাবেই না পরিস্থিতি পাল্টে গেছে’ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়ের পর নিজের অফিশিয়াল টুইটারে এ কথাই লিখেছেন ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত ভোগলে এতেই থেমে থাকেননি। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের ২২৪ রানের অবিস্মরণীয় জুটি নিয়েও মন্তব্য করেছেন। আলাদা আলাদা মন্তব্যে মাহমুদউল্লাহ-সাকিবকে ভাসিয়েছেন প্রশংসায়। মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা দুই জয়ে একটা বিষয়ে দারুণ মিলÑ মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি।সাকিব সম্পর্কে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে এল অন্যতম সেরা সেঞ্চুরিটি।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এমন দারুণ জয় অবশ্য ভোগলের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সেরা জয় নয়। তিনি এই দৌড়ে এগিয়ে রাখছেন ২০১৫ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টিকেই। যে জয় বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার। ভোগলের মতে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই জয়ের খুব কাছাকাছি থাকবে।আকাশ চোপড়া টুইট করেছেন মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে। তিনি ভেবে পাচ্ছেন না এমন একজন ব্যাটসম্যান আইপিএলে কোনো দল পান না কীভাবে, মাহমুদউল্লাহÑসুবহান আল্লাহ! তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি…সবগুলোই আইসিসির প্রতিযোগিতাতে। অবাক লাগছে, আইপিএলের কোনো দল মাহমুদউল্লাহকে নেয়নি কেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা দিন এটি।সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভন মাহমুদউল্লাহ-সাকিবের ২২৪ রানের জুটিতে মুগ্ধ। এমন জুটি তিনি অতীতে দেখেছেন কিনা মনে করতে পারছেন না সেটিও, ওয়ানডে ক্রিকেটে এর চেয়ে সেরা জুটির কথা আমি মনে করতে পারছি না। ৩৩ রানে ৪ উইকেট নেই। বল সুইং করছে এমন পরিস্থিতিতে এই জুটি। ভন নিজের টুইটে এই জুটি নিয়ে বেস্ট এভার কথাটি লিখে হ্যাশট্যাগ দিয়েছেন।
শহীদ আফ্রিদি বাংলাদেশের এই জয়কে দেখছেন দুর্দান্ত’ হিসেবেই। তিনি রীতিমতো চমকে গেছেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ বীরত্বে, ‘বাংলাদেশের দুর্দান্ত এক জয়। ঘুরে দাঁড়িয়ে চমকে দিল সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ।নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম বলেছেন, প্রচন্ড চাপের মুখেও মাথা নত করেনি বাংলাদেশ।অস্ট্রেলীয় লেগ স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন এমন জয়ের পর টুইটারে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশকে।সঞ্জয় মাঞ্জরেকার মুগ্ধ সাকিব-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে। বলেছেন, এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ম্যাচজয়ী বেশ কিছু জুটি দেখলাম। সাকিব-মাহমুদউল্লাহর জুটি সেগুলোর অন্যতম।সাবেক কিউই পেসার ড্যানি মরিসন নিজের টুইটে বাংলাদেশকে বাংলা টাইগার্স’ সম্বোধন করে লিখেছেন, সত্যিই দুর্দান্ত। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব দলকে কী চমৎকার ভাবেই না বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাল।

কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে গতরাতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম ম্যাচে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের জোড়া সেঞ্চুরির সাথে পঞ্চম উইকেটে দু’জনের রেকর্ড ২২৪ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে অষ্টম আসরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলার আশা ধরে রাখে টাইগাররা। বীরোচিত এমন জয়ের পর বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রশংসার জোয়াড়ে ভাসছে বাংলাদেশ দল। বিশ্বের সকল জনপ্রিয় পত্রিকা, টিভি সংবাদে ভালোভাবেই জায়গা করে বাংলাদেশের অবিস্মরণীয় এ জয়।যুক্তরাজ্যের পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ লিখেছে, নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে দিলো সাকিব-মাহমুদুল্লাহ।যুক্তরাজ্যের আরেক পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের শিরোনাম ছিলো এমন, ‘নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চাম্পিয়ানস ট্রফির আশা বাঁচিয়ে রাখলো বাংলাদেশ।ভারতের এনডিটিভিতে অনলাইনে লিখেছে, ‘সাকিব, মাহমুদুল্লাহর সেঞ্চুরির কাছে হারতে হলো নিউজিল্যান্ডকে। তাদের রেকর্ড ২২৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং ধস থেকে বেরিয়ে আসে এবং ৫ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে।
ভারতের কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম, কার্ডিফে দুই বাঘের দাপটে ছিটকে গেলো নিউজিল্যান্ড। শিরোনাম দেয়া ওই প্রতিবেদনে পত্রিকাটি লিখেছে, ‘সাকিব-মাহমুদুল্লাহর মহাকীর্তিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এল এক অসাধারণ জয়। যে জয় তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দৌঁড়ে টিকিয়ে রাখলো। আর ছিটকে দিলো নিউজিল্যান্ডকে।বিবিসির ইংরেজি ভার্সনে শিরোনামে লেখা হয়েছে, ‘নিউজিল্যান্ডকে হারাতে রেকর্ড করলো বাংলাদেশ’। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে ঐতিহাসিক সাফল্য দেখিয়েছে।পাকিস্তানের ডন পত্রিকার শিরোনামে ছিলো এমন, ‘সাকিব-মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিং-এ শেষ নিউজিল্যান্ড।