বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেছেন, চলতি অর্থবছরে মে মাস পর্যন্ত বস্ত্রখাত থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ প্রায় ২৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।তিনি বুধবার সংসদে সরকারি দলের সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।সরকারি দলের সদস্য রহিম উল্লাহ’র তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বস্ত্র ও পার্ট মন্ত্রণালয়ের বস্ত্র পরিদফতর তৈরি পোশাক খাতে কতিপয় সেবা দিয়ে থাকে। সেবাসমূহের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন, মেশিন ছাড়করণের সুপারিশ, অনাপত্তিপত্র, ইমপোর্ট পারমিট ও ওয়ার্ক পারমিট।সরকারি দলের সদস্য সোহরাব উদ্দিনের তারকা চিহ্নিত অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাট উৎপাদন মৌসুমে উচ্চফলনশীল ও মানসম্পন্ন পাট বীজ কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাট অধিদফতর উচ্চ ফলনশীল (উফশী) পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং উন্নত পাট পচন শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।তিনি বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচিত পাট চাষীদের ভিত্তি ও প্রত্যায়িত পাটবীজ, রাসায়নিক সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ ও চাষীদের উন্নত পাট ও পাটবীজ উৎপাদনের কলাকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ বলেন, ‘ইনকাম জেনারেটিং এক্টিবেটিস (আইজিএ) ট্রেনিং অব ওমেন এ্যাট উপজেলা লেভেল’ প্রকল্পের আওতায় সরকার ২ লাখ ১৭ হাজার ৪৪০ জন মহিলাকে আইজিএ প্রশিক্ষণ প্রদান করবে।তিনি আজ সংসদে সরকারি দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রামের অসহায় মহিলাদের সহায়তার জন্য সরকারের চলমান বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ২৫০৫৬.২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ইনকাম জেনারেটিং এক্টিবেটিস (আইজিএ) ট্রেনিং অব ওমেন এ্যাট উপজেলা লেভেল’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৪২৬টি উপজেলা, ৮টি বিভাগীয় শহর ও ৬৪টি জেলা শহরে দরিদ্র মহিলাদের ¯’ানীয় চাহিদার ভিত্তিতে ২টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেছেন, বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।তিনি সংসদে সরকারি দলের বজলুল হক হারুনের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, ৫টি বন্ধ পাটকল চালু করা হয়েছে। পিপলস জুট মিলস লিঃ (বর্তমানে খালিশপুর জুট মিলস লিঃ নামে), কওমী জুট মিলস লিঃ (বর্তমানে জাতীয় জুট মিলস লিঃ নামে), দৌলতপুর জুট মিলস লিঃ, কর্ণফুলী জুট মিলস লিঃ ও ফোরাত-কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরী।পাটমন্ত্রী বলেন, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসু, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুস-খুদ-কুড়া এই ১৭টি পণ্যের মোড়কীকরণে পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার কার্যকর করা হয়েছে।তিনি বলেন, চীনের সরকারি সহায়তা ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০-৬০ বছরের পুরনো ২৬টি পাটকল পর্যায়ক্রমে ‘বিএমআরই’ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বিশ্বের প্রধান পাটপণ্যের বাজারগুলোতে, আন্তর্জাতিক মেলায়, বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ পূর্বক রপ্তানি বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হয়েছে।মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক ও বিদেশী সরকারি ক্রেতা সংস্থাগুলোর ব্যবসায়িক টেন্ডারে প্রতিনিধি প্রেরণপূর্বক ব্যবসা সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।তিনি বলেন, পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করে নগদ সহায়তার পরিমাণ ৭ দশমিক ৫ থেকে বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।পাটমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল ‘ইডিএফ’র আদলে পাটশিল্প বিকাশের লক্ষ্যে শতকরা ২ ভাগ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।সরকারি দলের গোলাম দস্তগীর গাজীর এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের পাটের মূল্য বৃদ্ধি ও পাটজাত পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সরকার ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’ এবং ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩’ প্রণয়ন করেছে।তিনি বলেন, ওই আইন ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। ওই আইনের আওতায় এ পর্যন্ত ১৭টি পণ্য মোড়কীকরণে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে দেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন, ব্যবহার, চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।