ঈদের আগে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষ হওয়ার পর থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল ও রেল স্টেশনে।বৃহস্পতিবার পেরিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর তিনটি আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেল স্টেশনে মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে।এবার ঈদের সরকারি ছুটি ২৫ থেকে ২৭ জুন অর্থাৎ রোববার থেকে মঙ্গলবার। তার আগে দুদিন শুক্র আর শনিবার থাকায় কার্যত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা।সাড়ে ৯টায়। বাড়ি যাওয়ার জন্য ভোর ৬টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে আসি পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে। ট্রেনটি যখন প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ালো সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে নিয়ে উঠে পড়ি। আগেই টিকিট কাটা ছিল। এরপরও নির্দিষ্ট আসনে যায়গা পাইনি। যে যেভাবে পারছে সেভাবে উঠে বসে পড়ছে। ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা নেই। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার আগে বাংলা ট্রিবিউনকে এই কথা বলেন ইলিয়াস হোসেন।শুক্রবার (২৩ জুন) কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যতগুলো ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে তার প্রায় সবগুলোর অবস্থাই এমন। কোনওটিতেই তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেই। প্রতিটি আসন, বগি, ছাদে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারপরও লোকজন হুড়মুড় করে ট্রেনে উঠে বসছেন। ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে না উঠতে স্টেশন কর্তৃপক্ষের দিক থেকেও সতর্ক করা হচ্ছে। তবে কেউই কথা শুনছেন না।কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির পর থেকেই যাত্রীদের চাপ খুব বেড়ে গেছে। ঈদের আগে প্রতিদিনই প্রায় ২২ হাজারের মতো যাত্রী চলাচলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। তবে যাত্রীর সংখ্যা এরচেয়েও অনেক বেশি। আমাদের কোনও শিডিউল বিপর্যয় নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও পর্যাপ্ত। ট্রেনগুলো যাতে যথা সময়ে আসে ও ছেড়ে যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি। সকাল পর্যন্ত সব ট্রেনে নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা নেই।

পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ কাটাতে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। তাই এই সময় গাড়ির টিকিটের চাহিদা থাকে বেশি। তবে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় কোনও অনিয়ম চোখে না পড়লেও ঈদ যাত্রার শুরুতেই দেখা যাচ্ছে নানা অনিয়ম। বাড়তি টাকা গুনলেই মিলছে টিকিট। বাড়ি যেতেই হবে তাই বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট কিনছেন যাত্রীরা।অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় কাউন্টারগুলো থেকে বলা হয়েছিল সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। অথচ গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সোহাগ নামে এক যাত্রী জানান, তিনি দিনাজপুরে যাওয়ার দুটি টিকিট কিনেছেন ২ হাজার টাকায়। সাধারণ সময়ে এই টিকিটের মূল্য থাকে ১৪০০ টাকা। অথচ এখন কিনলেন ২ হাজার টাকায়। এদিকে টিকিটের গায়ে মূল্য লেখা ১৭০০ টাকা।এ বিষয়ে হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার থেকে সায়েম বলেন, যদি কেউ আমাদের কাছ থেকে টিকিট নিয়ে অন্য কোথাও বিক্রি করে তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। এ ধরণের ঘটনার জন্য আমাদের কোম্পানির সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে।আবদুল্লাহ আল বাকি নামে এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ২০০ টাকা বোনাস দিয়ে টিকিট নিয়েছি পরিচিত একজনের মাধ্যমে। আমার কর্মস্থল খাগড়াছড়ি। কিন্তু গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁয়ে। তাই অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় লাইনে দাঁড়াতে পারিনি। পরিচিত একজনের কাছ থেকে টিকিট নিয়েছি অতিরিক্ত ২০০ টাকা দিয়ে।

জানা গেছে, রাজধানীর কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কমলাপুর দিকে আসা ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় স্বাভাবিক হয়েছে। দুই দিন শিডিউল বিপর্যয়ের পর বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সকাল থেকে বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময় অনুযায়ীই দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, যান্ত্রিক ত্রুটি ও রেলের সয়ংক্রিয় সংকেত ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় গত সপ্তাহে প্রায় ২০টির মতো ট্রেন নির্ধারিত সময় ছেড়ে যেতে ও আসতে পারেনি। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল ১৫-২০ মিনিট এদিক-সেদিক হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।কমলাপুর থেকে শুক্রবার সকালে ছেড়ে গেছে- তুরাগ এক্সপ্রেস ময়মনসিংহের উদ্দেশে ভোর সাড়ে ৪টায়, জামালপুর এক্সপ্রেস ভোর সাড়ে ৫টায়, ধুমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহীর উদ্দেশে সকাল ৬টায়, সুন্দরবন এক্সপ্রেস খুলনার উদ্দেশে ৬টা ২০ মিনিটে, নীলসাগর এক্সপ্রেস নীলফামারীর উদ্দেশে সকাল ৮টায়, মহানগর প্রভাতী চট্টগ্রাম উদ্দেশে ৭টা ৪০ মিনিটে, রংপুর এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৯টায়, অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস ময়মনসিংহের উদ্দেশে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে, কর্ণফুলি সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম উদ্দেশে, মহুয়া এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৮টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশে, সিন্ধু এক্সপ্রেস কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ৭টা ২০ মিনিটে ও তিতাস এক্সপ্রেস আখাউরার উদ্দেশে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে।বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতুতে যানজট দেখা গেলেও শুক্রবার ভোরে কমে এসেছিল। কিন্তু সকালে সেতুতে একটি ট্রাক বিকল হওয়ায় ফের লেগেছে জট। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি শেখ শরীফুল হাসান।তিনি বেলা ১১টার দিকে বলেন, মেঘনা ব্রিজের গোড়ায় এখন কমে হাফ কিলোমিটারের মতো জ্যাম আছে। এটাও কমে যাবে আশা করছি। আস্তে আস্তে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।মাওয়া মহাসড়কেও তেমন যানজট নেই বলে সায়েদাবাদ থেকে বরিশাল-খুলনা অঞ্চলগামী বাসগুলোর কাউন্টারকর্মীরা জানিয়েছেন।উত্তরের পথে টাঙ্গাইলে মহাসড়কে গাড়িগুলোর গতি ধীর হওয়া ছাড়া আর তেমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একইচিত্র মহাখালী থেকে ময়মনসিংহগামী বাসের ক্ষেত্রেও।ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিভিন্ন রুটের যানবাহনের ভিড় থাকলেও সকালে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় তেমন যানজট দেখা যায়নি। মহাসড়কে ট্রাক, কভার্ড ভ্যান বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সকালে ঢাকা বাইপাস সড়কে প্রচুর ট্রাক-কভার্ড ভ্যান চলতে দেখা গেছে।সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় বাড়বে দুপুরের পর। দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলো দুপুরের পর থেকে ঘাট ছাড়তে শুরু করবে।

টার্মিনালগুলো থেকে সকালে ঠিক সময়ে বাস ছেড়ে গেলেও রাস্তার যানজটের আশঙ্কা নিয়েই রওনা হয়েছেন যাত্রীরা।গাবতলীর কয়েকজন কাউন্টার ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত তারা নির্ধারিত সময়ে বাসগুলো ছাড়তে পেরেছেন। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলে ধীরগতির কারণে পরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসআর ট্রাভেলেসের এজিএম টি আর প্লাবন বলেন, আমাদের হাতে গাড়ি ছিল, সেগুলো সকাল ৯টা পর্যন্ত ঠিক সময়ে ছাড়তে পেরেছি। কিন্তু যানজটের কারণে গতকাল বিকালের দিকে যাওয়া গাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে। এরপর থেকে লেট হবে।তিনি বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যমুনা ব্রিজ থেকে এদিকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত যানজট রয়েছে।রাস্তার যে যানজট সেটাকে স্বাভাবিক হিসাবে দেখছেন শ্যামলী পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টারের ব্যবস্থাপক সেলিম শিকদার।

উত্তরবঙ্গমুখী বাসের এই কাউন্টার ব্যবস্থাপক বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট যেটা আছে সেটা স্বাভাবিকই বলতে হবে। কালকের যাওয়া গাড়িগুলো অনেকটা ঠিক সময়ে ফিরে আসছে।রাস্তায় যে পরিস্থিতি আছে সেটা অন্যান্য সময়ের মতোই। রাস্তা একেবারে ক্লিয়ার না থাকলেও গাড়ি ভালোভাবে ফিরে আসছে। এটা বজায় থাকলে ঠিক সময়ে গাড়ি ছেড়ে যেতে পারবে।শ্যামলীর এই কাউন্টার থেকে নওগাঁ, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পাবনা রুটের গাড়ি ছাড়ে।গাবতলী ও কল্যাণপুরের কাউন্টারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, অগ্রিম টিকেটের যাত্রীরা সকাল থেকে ঠিক সময়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করতে পেরেছেন। তবে অন্য কাউন্টারগুলোর সামনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে অনেক।মঙ্গলবার সময়সূচি এলোমেলো হয়ে গেলেও পরদিনই সামলে ওঠেছিল রেলওয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনগুলো মোটামুটি সময় ধরে ছাড়ছে।যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়ায় নিয়ম ভেঙে প্রায় সব ট্রেনের ছাদেই মানুষকে চড়তে দেখা গেছে।কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১৪টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। অধিকাংশ ট্রেনে যাত্রীর প্রচ- চাপ লক্ষ্য করা গেছে।এই সময় পর্যন্ত প্রায় সবগুলো ট্রেন নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছেড়ে যায় বলে তার দাবি; যদিও রংপুর এক্সপ্রেসকে নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর ছাড়তে দেখা যায়।তার আগে রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ বলেছিলেন, আমাদের ট্রেন সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা, ট্রেন প্লাটফর্মে এসেছে, কিন্তু প্রচন্ড ভিড় দেখা যাচ্ছে। ভিড়ের কারণে ভোগান্তির আশঙ্কা করছি। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) সালাহ উদ্দিন ভূইয়া বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর থেকে যাত্রী চাপ বেড়ে গেছে। এই চাপ সারা রাত ছিল, সকালের ট্রেনগুলোতে আরও বেড়েছে।একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী মাদ্রাসা শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভোর বেলায় স্টেশনে এসেছি। ট্রেনগুলোতে ভিড় দেখা যাচ্ছে। যেভাবেই হোক বাড়ি যেতে হবে।

তিনি একতা এক্সপ্রেসে করে সিরাজগঞ্জ নেমে তারপর বাসে করে বগুড়ায় গ্রামে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছেন।কমলাপুর রেলস্টেশনের আনসার কমান্ডার ইয়ার হোসেন বলেন, ট্রেনগুলো সময়সূচি অনুসারেই ছেড়ে যাচ্ছে। তবে গত দুই দিনের চেয়ে আজ যাত্রীদের অনেক বেশি ভিড়।তিনি জানান, খুলনার উদ্দেশে সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। এরপর সিলেটের উদ্দেশে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পারাবত এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামের উদ্দেশে সকাল ৭টায় সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে এগারসিন্দুর ৭টা ১৫ মিনিটে, দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে তিস্তা ৭টা ৩০ মিনিট, চট্টগ্রামের উদ্দেশে মহানগর প্রভাতি ৭টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে গেছে।চিলাহাটির উদ্দেশে নীলসাগর এক্সপ্রেস নির্ধারিত সকাল ৮টার পরিবর্তে ৮টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যায়।যাত্রীচাপের কারণে কোনো কোনো ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরি করে ছেড়ে যাচ্ছে বলে নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন।

ভেতরে গাদাগাদির পাশাপাশি বেশিরভাগ ট্রেনের ছাদে করে ঝুঁকি নিয়ে বহু মানুষ ভ্রমণ করছেন। ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময়ও কেউ কেউ দৌড়ে উঠছেন।এ বিষয়ে সিতাংশু বলেন, ট্রেনের ছাদে যাতে কেউ না উঠে সেই জন্য আমরা বার বার নিষেধ করছি, সচেতনতামূলক মাইকিং করছি, আমাদের লোকেরা ছাদে না উঠতে যাত্রীদের বাধাও দিচ্ছে, তারপরও যাত্রী চাপের কারণে ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না।এসআই সালাহ উদ্দিন বলেন, ছাদে যাতে কেউ না উঠে সেজন্য আমরা যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছি; কিন্তু কোনো কাজে আসছে না।শুক্রবার সকালে সদরঘাটে লঞ্চ যাত্রীর চাপ দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা কমে যায়। দুপুরের পর আবার চাপ বাড়বে বলে ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান।সাধারণত সকালে চাঁদপুরসহ নিকট গন্তব্যের লঞ্চগুলো ঢাকা ছেড়ে যায়। মাঝে বিরতির পর বিকালে শুরু হয় বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালীসহ দূর গন্তব্যের লঞ্চগুলোর যাত্রা।বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) হুমায়ূন কবির বলেন, ভোর থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত যাত্রীর চাপ ছিল।সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৫টি লঞ্চ ছেড়ে যায় সদরঘাট থেকে। বৃহস্পতিবার সারাদিনে লঞ্চ ছেড়েছিল ৮২টি।বরিশালগামী এমভি টিপু লঞ্চের কর্মী সুজন বলেন, দুপুরের দিকে যাত্রী এমনিতেই কম থাকে। বিকালে যাত্রীর চাপে আপনারা (সাংবাদিক) পন্টুনে দাঁড়াতে পারবেন না।যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে ঘাটে পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মওদুদ হাওলাদার।তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৩৬ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন সদরঘাটে। এছাড়া নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, র‌্যাব সদস্যের সঙ্গে বিএনসিসির স্বেচ্ছাসেবকরাও রয়েছে।বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, ঘাটের পরিস্থিতি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে দেখছেন তারা। কোথাও ধরনের অপ্রীতিকর কিছু দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধান করা হচ্ছে।