সাধারণত রিমোট কন্ট্রোল, সেল ফোন, ফ্ল্যাশ লাইট, খেলনা ইত্যাদিতে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়।কিন্তু কিছু মানুষ তাদের শরীরেও ব্যাটারি বহন করেন, পেসমেকারকে শক্তি সরবরাহের জন্য। ব্যাটারি ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হতে পারে বা এটি লিক করে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়াতে পারে, এ ব্যাপারটা অনেককেই চিন্তায় ফেলে দেয়। লস এঞ্জেলস এর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউসিএলএ) গবেষকেরা একটি নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন, এই বায়োলজিক্যাল সুপার ক্যাপাসিটেটরটি একটি চুলের চেয়েও পাতলা। এটি শরীর থেকে শক্তি সংগ্রহ করে শরীরে বসানো ডিভাইসকে শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এখন আর ব্যাটারি চালিত পেসমেকার ব্যবহার করতে হবে না।

অ্যাডভান্সড এনার্জি মেটারিয়ালস নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইউসিএলএ এবং ইউনিভার্সিটি অফ কানেক্টিকাট এর গবেষক দল তাদের এই উদ্ভাবনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। এই সুপার ক্যাপাসিটটেরটি গ্রাফিন দিয়ে তৈরি, যা একটি নিউট্রাল কার্বন ন্যানোম্যাটেরিয়াল এবং মানুষের শরীরের প্রোটিন এর মত প্রোটিন দ্বারা আবৃত যা ইলেক্ট্রোডের মত কাজ করে। এই ডিভাইসটি এনার্জি হারভেস্টার দ্বারা চালিত হয় যা শরীরের তাপ, নড়াচড়া এবং রক্তের আয়নকে শক্তিতে পরিণত করে।প্রচলিত পেসমেকার ৬ থেকে ৮ মিলিমিটার পুরু হয় যা সুপারক্যাপাসিটেটরের চেয়ে অনেক অনেক বড়। ব্যাটারির অনুপস্থিতির কারণেই এটি মাত্র ১ মাইক্রোমিটার চওড়া হয়। গবেষকেরা বলেন, এই ক্ষুদ্রাকৃতির কারণেই ডিভাইসটি শক্তিতে দক্ষ হয়ে ওঠে। মেডিকেল ইমপ্লান্ট এ ব্যবহৃত লিথিয়াম ক্যামেরা ব্যাটারির মত নয় এটি। এই গ্যাজেটটি শরীরের ভেতরে বাঁকা হতে পারবে কোনো ক্ষতি ছাড়াই।গবেষকেরা বিশ্বাস করেন যে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে যদিও ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না, সুপারক্যাপাসিটেটর অনেক নিরাপদ ও কার্যকরী ডিভাইস হিসেবে কাজ করতে পারে ঐতিহ্যগত ব্যাটারিচালিত ডিভাইস এর তুলনায়।কার্যকরী হওয়ার জন্য ব্যাটারিহীন পেসমেকার এ সুপারক্যাপাসিটেটর থাকতে হবে যা শক্তি ধরা, সংরক্ষণ এবং পরিবহন করতে পারে। গবেষণার সহ লেখক এবং ইউসিএলএ এর পোষ্টডক্টরাল গবেষক মেহের ইএল-কাদি বলেন, বাণিজ্যিক সুপারক্যাপাসিটেটর ধীরে কাজ করে। আমাদের গবেষকেরা শক্তিকে আরো কার্যকরীভাবে ধরার জন্য সুপারক্যাপাসিটেটরের নকশার প্রতি ফোকাস করছেন এবং মানুষের শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার উপায় খুঁজে পেয়েছেন।