চিনির দামে দীর্ঘদিনের অস্বস্তিকর চড়ামূল্য কমতে শুরু করেছে। ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দামও কিছুটা কমে এসেছে। এদিকে,বাজারে ৪৬ টাকার কমে কোনো চাল নেই। সরকারি হিসাবেই গত এক মাসে সাধারণ মানের মোটা চালের দাম বেড়েছে আট শতাংশের বেশি; আর এক বছরে বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ।মোটা চালের ভোক্তা প্রধাণত নিম্নআয়ের মানুষ। আর যারা সরু চাল কেনার সামর্থ্য রাখেন, তাদের এখন প্রতি কেজিতে গুণতে হচ্ছে কেজিতে ৬০ টাকার বেশি। এক বছরে এ ধরনের চালের দাম বেড়েছে সরকারি হিসেবে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।

মহানন্দ বিশ্বাস এখন দুপুরে আধপেটা খেয়ে কাটান, রাতে খান পেটভরে। দুপুরে হোটেলে এক থালা ভাত খেতে দাম দিতে হয় ১২ টাকা। আগের চেয়ে প্রতি থালা ভাতের দাম ২ টাকা বেড়েছে, ভাতের পরিমাণও কমেছে। ফলে এখন ভরপেট খেতে গেলে এক বেলায় ভাতের পেছনেই ব্যয় হয় কমপক্ষে ৩৬ টাকা। বিপরীতে রাতে মেসের খাবারের বিল ৫০ টাকা। এ টাকায় মেলে এক পদ তরকারি, এক বাটি ডাল। আর ভাত খাওয়া যায় ইচ্ছেমতো।মহানন্দ বললেন, রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর সেকশন এলাকায় জুতা সেলাইয়ের কাজ করে দিনে ৪০০ টাকার বেশি আয় হয় না। ফলে দুপুরে ৬০-৭০ টাকা খরচ করে পেটভরে খাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আবার যশোরের শেখহাটিতে থাকা স্ত্রী-সন্তানের জন্য বাড়তি খরচ পাঠাতে হয়। কিন্তু আয় বাড়েনি।

চালের দামে গত কয়েক বছর মহানন্দ বিশ্বাসের মতো মানুষেরা যে স্বস্তিতে ছিলেন, তা চরম অস্বস্তিতে পরিণত হয়েছে গত কয়েক মাসে। বিশ্বের মধ্যে মোটা চালের দাম এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। বেড়েছে সব ধরনের মাঝারি ও সরু চালের দামও। ফলে স্বস্তিতে নেই সীমিত আয়ের মানুষেরা। চার-পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারে কেবল চাল কেনার পেছনেই খরচ বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। প্রধান খাদ্যের দাম বাড়ায় রিকশাভাড়া বেড়েছে, কর্মজীবী মানুষকে বাইরে খেতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, চাল এখনো খাদ্যতালিকার প্রধান খাদ্য। এর দাম বাড়লে নিম্ন আয়ের মানুষেরা দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ ঠিক রাখতে গিয়ে অন্যান্য খরচ কমিয়ে ফেলেন। অথবা অনেক সময় দেনাও করতে হয়। ফলে চালের দাম বাড়লে অবধারিতভাবে একটা প্রভাব পড়ে, সেটা কষ্টের। তিনি বলেন, বোরো ধান আসার পরও চালের নাম না কমা একটা আশঙ্কার বিষয়। খাদ্য মজুতও সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এটা যে বড় ধরনের একটি সংকট, সেই উপলব্ধি মাথায় নিয়ে মাঠে নামা জরুরি, যাতে এটা মহাসংকটে পরিণত না হয়।চালের দামের প্রসঙ্গ উঠতেই চিড়িয়াখানা যাওয়ার সড়কের পাশের চায়ের দোকানি নার্গিস বেগম বললেন, তিনি এক বস্তা চাল কিনেছেন ৪৯ টাকা কেজি দরে। এর আগেরবার একই চাল তিনি ৪২ টাকা দরে কিনেছিলেন।

রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন মোটা চাল মানভেদে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৫০-৫৪ টাকা ও সরু চাল ৫৬-৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় রশিদ, এরফান, মোজাম্মেলসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল। সেগুলো দীর্ঘদিন ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কয়েক মাসে সেটা বাড়তে বাড়তে এখন ৫৬ টাকায় উঠেছে।

প্রধান খাদ্য চালের দাম গত তিন মাস ধরে বাড়তে থাকায় কষ্টে পড়েছে সাধারণ মানুষ। চালের বাজার যেভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের মত খাদ্য সঙ্কট ফিরে আসার লক্ষণ দেখছেন একজন কৃষি অর্থনীতিবিদ।২০০৭-২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সেইসব দিনে বাংলাদেশে মোটা চালের কেজি ৪০ টাকায় উঠেছিল। সরু চালের কেজি বেড়ে হয়েছিল ৫৬ টাকা। স্বাধীনতার পর সেটাই ছিল চালের সর্বোচ্চ দর।বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সম্মনীয় ফেলো এম আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্বজুড়ে চালের তীব্র সঙ্কট দেখা দেওয়ায় সে সময় দেশের বাজারে দাম বেড়েছিল হু হু করে। সারা দেশে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।

আর এ বছর হাওরে আগাম বন্যায় বোরো ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান ছাড়া প্রায় সব দেশেই চাল উৎপাদন কমেছে। চীনে কমেছে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ; ভিয়েতনাম ও ভারতেও কমেছে।আমার মনে হয়, আবারও সেই ২০০৭-২০০৮ সালের সঙ্কেটের মুখে পড়ছি আমরা। শেখ হাসিনার সরকারের ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম ওঠানামা করলেও চালের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। মোটা চালের কেজি ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, আর সরু চাল ৪০ থেকে ৪২ টাকা।টানা কয়েক বছর বাম্পার ফলনের কারণে ওই সময় বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ৬ শতাংশের নিচে। কিন্তু কয়েক মাস ধরেই চালের বাজার অস্থির; দাম বেড়েই চলেছে।আসাদুজ্জামান বলেন, মিল মালিক ও আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সরকার কিছুই করছে না। সম্পূর্ণ উদাসীন!

রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মহাখালী, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বর্ণা, পাইজাম, চায়না ইরির মত ভালো মানের মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর নিম্নমানের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকায়। মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মত সরু চাল ৫৬ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দেশে চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার ঢাকার বাবুবাজার-মৌলভীবাজারে চালের দাম খুচরা বাজারের চেয়ে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা কম।পাইকারদের ভাষ্য, চালের দামের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নেই। মিল থেকে কেনা দামের সঙ্গে প্রতি বস্তায় ৫৫ টাকা পরিবহন খরচ ধরে তার ওপর ১০ থেকে ১৫ টাকা লাভ রেখে তারা পাইকারিতে বিক্রি করেন।কুষ্টিয়ার একটি মিল মোটা চালের বস্তা ১৯৫০ টাকা (কেজিতে হয় ৩৯ টাকা) এবং মিনিকেট ২৬০০ টাকায় (কেজিতে দাঁড়ায় ৫২ টাকা) ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ধানের দাম বাড়ার কারণে এই পরিস্থিতি বলে মিল মালিকদের ভাষ্য।মিল মালিকরা বলছেন, প্রতি মণ ধান কিনতে ১২শ টাকার বেশি লাগছে। প্রতি মন ধানে চাল পাওয়া যায় ২৭ কেজির মত। অবশ্য খুদ আর কুড়া থেকে উৎপাদন খরচের একটি বড় অংশ উঠে আসে।
বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে প্রতি কেজি ধান ২৪ এবং চাল ৩৪ টাকায় কিনছে সরকার।চালের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চালের দাম নিয়ে আমি কোনো বক্তব্য দেব না। খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজির সঙ্গে আলাপ করেন।পরে ডিজি বদরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাওড়ে অকাল বন্যা এবং বোরো মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এবার চাহিদার চেয়ে ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। সে কারণেই সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে এবং দাম বেড়েছে।চাল আমদানির ক্ষেত্রে সবমিলিয়ে ২৮ শতাংশ শুল্ক তুলে দেয়া হলে আমদানি বাড়বে এবং তাতে দামও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) তথ্য অনুযায়ী, ১২ জুন সরকারি গুদামগুলোতে ১ লাখ ৯৩ হাজার ১৯০ মেট্রিক টন চাল ছিল। আর গত বছর একই দিনে মজুদের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৯৩ হাজার ২০ লাখ টন।কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে এফপিএমইউ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের পাইকারি দর এখন ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা ৫০ পয়সা। আর খুচরা দাম ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।গত ২ মে থেকে বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরুর পর ১১ জুন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৫৩২ টন সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।

পুরান ঢাকার বাবুবাজারের মেসার্স শুভ শান্ত রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. সেলিম বলেন, অন্যান্য বছর জ্যৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান উঠলে চালের দাম কমে যায়। কিন্তু এবার চিত্রটা পুরো ব্যতিক্রম। নতুন চাল বাজারে আসার পরও চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে।পাইকাররা বলছেন, হাওড়ে ফসল নষ্টের অজুহাতে নতুন চাল আসার পরও মিল মালিকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর ধাপে ধাপে দাম বৃদ্ধির পেছনে কাজ করছে একটি চক্র (সিন্ডিকেট)।শুভ শান্ত রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. সেলিমের অভিযোগ, “মিল মালিকরা ধান মজুদ করে বাজারে চালের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। ফলে বোরো মৌসুমে নতুন চাল ওঠার পরও দাম কমার পরিবর্তে বেড়েছে।এক সময় সনাতন পদ্ধতির চাতাল থেকে চাল উৎপাদন হলেও এখন চালের বড় অংশের সরবরাহ আসে অটো রাইস মিল থেকে। কুষ্টিয়া, শেরপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁসহ বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের অটো রাইস মিল চালু হয়েছে।বাবুবাজারের মেসার্স চৌধুরী রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপক আবদুল জব্বার ভান্ডারি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে শিল্প গ্রুপগুলো অটোমিল করে সারা দেশের চাল নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে সরকার চালের মূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় নামিয়ে আনতে পারছে না।

গত এপ্রিলে বোরো ধান ওঠার আগে থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন চাল বাজারে আসার পরও চালের দাম বেড়ে যাওয়ার এমন ঘটনা আমার ২৫ বছরের ব্যবসায়ী জীবনে শুনিনি।এই পাইকার বলছেন, বড় মিলগুলো বেশি পরিমাণে ধান কিনে মজুদ করায় ছোট মিল ও চাতালগুলো ধান কিনতে না পেরে ব্যবসা হারাতে বসেছে।

বাবু বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী এমদাদ হোসেন বলেন, নতুন চাল ওঠার পর তৃতীয় দফায় মোটা চালের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি বেড়েছে। এ অবস্থায় সরকার কোনো উদ্যোগ না নিলে সঙ্কট আরও বাড়বে।এক দিকে ধানের সঙ্কট, অন্যদিকে ধানের ওপর মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণ এবং পুঁজিপতিদের মজুদের কারণে চালের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করছেন।

ঢাকার মিরপুরে দুই যুগের বেশি সময় ধরে চলের ব্যবসায় জড়িত নিউ বিল্লাল রাইস এজেন্সির মালিক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, গত মে মাসে ঢাকায় চালের বিক্রি ২/৩ গুণ বেড়ে গিয়েছিল। জুন মাসে চালের দাম বাড়বে এমন হুজুগে লোকজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল সংগ্রহ করেছে তখন।চালের বাজার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কৃষি অর্থনীতিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারের হাতে চাল নেই, এ তথ্য মিল মালিক ও আড়তদাররা জেনে গেছেন। সে কারণে তারা একজোট হয়ে ‘সিন্ডিকেট করে’ বাজারে চাল ছাড়ছেন না। এর ফল হল দাম বৃদ্ধি।

শুক্রবার ঢাকার একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, শহরের কিছু এলাকায় পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়েছে। তবে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দামই স্থিতিশীল।এদিন মিরপুর ২ নম্বরের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা ও পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। দেশি রসুন ১০০ টাকা আর আমদানি করা রসুনের দাম কিছুটা কমে ১২০ থেকে দেড়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।তবে একইদিন কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আলুর পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, অর্থাৎ কেজি ১৪ টাকায়। আর ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা।মিরপুরে আল মদিনা জেনারেল স্টোরের ব্যবস্থাপক বেলাল মাহমুদ জানান, আলু ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও তা অস্বাভাবিক নয়। প্রতি বছর সিজন শেষে আলুর দাম এই পর্যায়েই থাকে।

ঈদের আগের সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। তবে তা এখন কমে ১৪০ টাকা থেকে দেড়শ টাকায় নেমেছে।ঢাকার বাজারগুলোতে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন প্রতি ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকায়। ডিমের বর্তমান এই মূল্য বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।মিলগেইটে চিনির দাম স্বাভাবিক থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে কৃত্রিম সঙ্কটের কারণে চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছিল চিনি। তবে ঈদের দুই সপ্তাহ পর তা অনেকটাই কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানি হাবিব রহমান জানান, দীর্ঘদিন পর চিনির দাম কমেছে, যার প্রভাব পৌঁছেছে খুচরা বাজার পর্যন্ত। ঈদের আগে তারা ৭০ থেকে ৭২ টাকায় চিনি বিক্রি করলেও এখন বিক্রি করছেন ৬২/৬৩ টাকায়।বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজার থেকে বস্তা (৫০ কেজি) ২৯শ টাকায় চিনি সংগ্রহ করি। সে হিসাবে প্রতি কেজির চিনির দাম পড়ে ৫৮ টাকা।তবে চিনির এই ন্যায্যমূল্য শহরের অন্যান্য স্থানে দেখা যায়নি। এদিন মিরপুরে খুচরা দোকানগুলোতে চিনির কেজি ৬৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।মাছের বাজারে মাঝারি আকারের (৬০০ গ্রাম) ইলিশের জোড়া ৭০০ টাকা, রুই মাছের কেজি ২৪০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০, রূপচাঁদা ৪০০ এবং পাবদা ৩৫০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।পটল ২০ টাকা, ঢেঁড়শ ২০ টাকা, কাকরোল ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, কচুমুখী ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।