দুই মাসের জন্য লন্ডন সফরে আসছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আগামীকাল শনিবার তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবার (১৬ জুলাই) তার লন্ডনে পৌঁছানোর কথা। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা একথা জানিয়েছেন।খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বৃহস্পতিবার রাতে প্রস্তুতি সভা করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি। তাঁকে স্বাগত জানাতে যুক্তরাজ্য বিএনপি সভা করলেও খালেদা জিয়ার সফরের সবকিছু তদারকি করছেন তার বড় ছেলে তারেক রহমান নিজে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, দু’মাসের মতো সময় লন্ডনে থাকার পরিকল্পনা আছে খালেদা জিয়ার। এখানে তার ঈদ উল আজহাও করার পরিকল্পনা আছে।যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানান,খালেদা জিয়া কবে আসছেন সেটি তারা জানা নেই।এদিকে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সন্ধ্যায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন খালেদা জিয়া।লন্ডনে তারেক রহমান রয়েছেন, যিনি বিএনপিতে মায়ের পরের পদটিতে রয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলে আসছেন, প্রবাসে থাকা জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের ইশারাই বিএনপি পরিচালিত হয়।

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা এবং আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার আগে খালেদার এই লন্ডন সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ রয়েছে।বরাবর গুলশানে নিজের কার্যালয়ে খালেদা জিয়া দলীয় বৈঠকগুলো করলেও বৃহস্পতিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকটি হয় গুলশানে তা বাড়ি ফিরোজায়।বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার দলীয় নেত্রীর লন্ডন সফরের কথা সাংবাদিকদের জানান।তিনি বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী ১৫ জুলাই যুক্তরাজ্য সফর করবেন। আমি আপনাদেরকে অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে তিনি চোখে ও পায়ের চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন।

কবে নাগাদ তিনি ফিরবেন- জানতে চাইলে মহাসচিব বলেন, এটা নির্ভর করবে তার চিকিৎসার উপর।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়েছিলেন। সেবার তারেকসহ পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করেই দেড় মাস পর ফিরেছিলেন তিনি। তারেক ও তার স্ত্রী-সন্তানরা ছাড়াও প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও দুই সন্তানও তখন লন্ডনে ছিলেন।যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা করলেন খালেদা জিয়া- জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, বন্যা পরিস্থিতি, চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রাদুর্ভাব, চালসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণের অপ্রতুলতার কথা তুলে ধরে অবিলম্বে সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানোর দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।ফখরুল বলেন, সারাদেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সরকার গ্রেপ্তার করছে, হয়রানি ও নির্যাতন চালাচ্ছে।সরকার ‘নির্বাচনের হাওয়া’ তুলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন গত সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির মহাসচিব।তারা একা হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর বিরোধী দলকে প্রচার-প্রচারণার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। আমরা এহেন নীতির নিন্দা জানাচ্ছি।আমরা বলতে চাই, অবশ্যই সরকারকে ডেমোক্রেটিক স্পেস তৈরি করতে হবে, সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে,বলেন ফখরুল।