নিজ কার্যালয়ে বসে ঘুষ নেওয়ার সময় নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম ফখরুল ইসলামকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে অধিদপ্তরের কাযালয় থেকে দুদকের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি দল অভিযানে গিয়ে তাকে ধরে।তিনি বলেন, জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণকালে তাকে হাতেনাতে আমরা আটক করি।ফখরুল ইসলামকে মতিঝিল থানায় নেওয়া হয়েছে জানিয়ে নাসিম বলেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ঘুষ না পেলে তিনি নৌযানের নকশা অনুমোদন করতেন না। নৌযানের আকারভেদে ঘুষের এই হার ওঠা-নামা করত। নৌযান ছোট হলে ঘুষের দর কম। আর আকার বড় হলে ঘুষের দরও বেড়ে যেত কয়েক গুণ। এই তিনি হলেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এ কে এম ফখরুল ইসলাম। নিজ কার্যালয়ে বসেও ঘুষ নিতেন তিনি। দেশে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানগুলোর নকশা নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিতে হয়।মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলে অবস্থিত নৌপরিবহন অধিদপ্তরে নিজ কার্যালয়ে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হন ফখরুল ইসলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি দল আগে থেকে ফাঁদ পেতে ছিল। বেলা দুইটার দিকে এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিচ্ছিলেন ফখরুল ইসলাম। এ সময় তাঁকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তাকে মতিঝিল থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদক সূত্র জানায়, নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরে জমা দিয়েছেন, এমন এক ব্যক্তি দুদকের কাছে অভিযোগ করেন যে নৌযানের নকশা অনুমোদন করে দেওয়ার বিনিময়ে ফখরুল ইসলাম তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। ঘুষ দেওয়াও অপরাধ, তাই তিনি ঘুষ দেবেন না। ওই ব্যক্তির অভিযোগ পেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। আজ ফখরুল ইসলামের কার্যালয়ে দুদকের লোকজন ছিল। দুপুরে নিজ কক্ষে বসে তিনি ঘুষের পাঁচ লাখ টাকা নেন। ভেতর থেকে সংকেত পেয়ে দুদক সদস্যরা ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে ওই টাকা উদ্ধার করা হয়।নাসিম আনোয়ার বলেন, ফখরুল ইসলাম ঘুষ না নিয়ে নৌযানের নকশা অনুমোদন করেন না। নৌযানের প্রকারভেদে তাঁর ঘুষের রেটও ভিন্ন। পাঁচ লাখ থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষের রেট ওঠা-নামা করে। ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ আছে। এগুলো কমিশনের নজরে এনে অনুমোদন নিয়ে অনুসন্ধান করা হবে।