ভিসা জটিলতায় যাত্রী সঙ্কটের কারণে শুক্রবারও একটি এবং শনিবার ২টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ১৯টি ফ্লাইট বাতিল হলো।শুক্রবার সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সৌদির জেদ্দার উদ্দেশ্যে একটি ফ্লাইট যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্ধেক যাত্রীই ভিসা না পাওয়ায় ফ্লাইটটি বাতিল করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। যাদের ভিসা আছে তাদের অন্য ফ্লাইটে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী পরিষদ।ভিসা জটিলতা ও মোয়াল্লেম ফি বাড়ানোসহ নানা সমস্যার কারণে এ বছর ভোগান্তিতে পড়েছেন কমপক্ষে পৌঁনে ৭ হাজার হজযাত্রী। এ জটিলতার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে দায়ী করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান।তবে অভিযোগ অস্বীকার করে, সৌদি সরকারের পদ্ধতিগত জটিলতার কারণেই সমস্যা হচ্ছে বলে মন্তব্য হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হবের। এদিকে, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি হজ ফ্লাইট আজ শুরু হয়েছে। ভিসা জটিলতায় যাত্রী সঙ্কটের কারণে দিনের প্রথম হজ ফ্লাইটটি বাতিল করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ। তবে জেদ্দার উদ্দেশে আরো ৪টি ফ্লাইট ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫৫মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। এরইমধ্যে একটি ফ্লাইট যাবে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে।বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজকে আর কোনো ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ভিসা জটিলতা ও মোয়াল্লেম ফি বাড়ানোসহ নানা সমস্যায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের ১৬টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত পৌঁনে ৭ হাজার হজ যাত্রী।
এদিকে, ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও নানা জটিলতায় এখন পর্যন্ত ভিসা পেয়েছেন ৪৮ হাজার যাত্রী। তাদের মধ্যে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২৩ থেকে ২৪ হাজার হজ যাত্রী।
হজ যাত্রীদের পুনরায় হজে যেতে আরো দুই হাজার সউদী রিয়েল দিতে হবেসব দেশের হজ যাত্রীদেরই পুনরায় হজে যেতে অতিরিক্ত দুই হাজার সউদী রিয়েল দিতে হবে। বাংলাদেশসহ হজ এবং ওমরা পালনকারী সব দেশের ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হজ পালনকারী হজ যাত্রীদের পুররায় এই অর্থ প্রদান করতে হবে।ভিসা আবেদন লজমেন্ট করার ক্ষেত্রে প্রতি এন্ট্রি ফি বাবদ দুই হাজার সউদী রিয়েল প্রদান করার নিয়ম সকল দেশের হজ এবং ওমরা পালনকারীদের জন্য সউদী আরব এই বিধান ২০১৫ ও ২০১৬ থেকে কার্যকর করেছে।বৃহস্পতিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ শাখার সহকারী সচিব এস এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ খবর জানানো হয়।হজ এজেন্সীজ অব বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা বাসসকে জানান, সউদী আরবের হজ এবং ওমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তদের সাথে এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দুই হাজার সউদী রিয়েল মওকুফ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সউদী কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করে জানায় যে শুধু বাংলাদেশ নয় এই নিয়ম হজ এবং ওমরা পালনকারী সব দেশের হাজীদের জন্য করা হয়েছে। এই অর্থ মওকুফ বা স্থগিত করার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশকেও পুনর্বার হজকারী প্রত্যেক হাজীকে এই দুই হাজার রিয়েল পরিশোধ করতে হবে।চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে আত্মীয়স্বজনসহ বিভিন্ন কারণে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হজে গেছেন এমন সংখ্যা ৭ থেকে ৮ হাজার হতে পারে বলে একটি হজ এজেন্সীর কর্মকর্তা হেদায়েত ইসলাম রাজু বাসসকে জানান।
যেসব হজ এজন্সীর মাধ্যমে ২০১৫- ও ২০১৬ সালের পর চলতি বছর পুনর্বার হজে যাচ্ছেন এমন সব হজ্ যাত্রীর কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট্র এজন্সেীকে দুই হাজার রিয়েল সমপরিমাণ অর্থ আদায় করে তা জমা দিতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট হাজীর যাতায়াত বিঘœ ঘটলে উক্ত এজেন্সী দায়ী হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।এদিকে, ধর্মমন্ত্রণালয় চলতি ২০১৭ সালের হজে অংশগ্রহণকারী সকল হজ এজেন্সির জন্য হজযাত্রীদের প্রতিস্তাপনের সংখ্যা শতকরা ৪ জন থেকে বৃদ্ধি করে ৭ জনে উন্নীত করেছে।ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ শাখা বৃহস্পতিবার এই বিষয়েও অপর একটি আদেশ জারি করে হজ এজেন্সী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে জানিয়ে দিয়েছেন।হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ হাবের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার এবং বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে মৃত্যুজনিত, অসুস্থতাজনিত এবং অন্যান্য কারণে হজযাত্রীদের প্রতিস্থাপনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।হজযাত্রীদের প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে হজ বিষয়ক কমিটি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।