লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা বাজারের পাশ দিয়ে বহে চলা সানিয়াজান নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে আবাসন প্রকল্প ‘সানিয়াজান গুচ্ছগ্রাম’। সরকারি সহযোগিতায় ঐ নদীতে লোহার তৈরি ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করে এই প্রকল্পে আশ্রিতদের আমিষের চাহিদা পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। সেই মোতাবেক উপজেলা মৎস্য অফিস, খাঁচা তৈরি করে বসালেও ৬ মাসের মধ্যে আজও সেই খাঁচায় মাছেন কোন পোনা অবমুক্ত করা হয়নি। ফলে আমিষের চাহিদা মেটানো তো দূরের কথা, আজও একটু আলোর মুখ দেখল না প্রকল্পটি। অযত্নে আর অবহেলায় শুন্য খাঁচা গুলো আজও পড়ে আছে নদীতে, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

গুচ্ছগ্রামবাসী জানালেন, গুচ্ছগ্রামে আসার পরই পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাটগ্রাম উপজেলা মৎস্য অফিস ভাসমান মাছ চাষ প্রকল্পটি চালু করার নিশ্চয়তা দেন আমাদের।
এই প্রকল্পে ১০টি লোহার তৈরী খাঁচা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু লোহার তৈরী খাঁচা না দিয়ে মাত্র ৪টি জালের তৈরী খাঁচা বসানো হয়। সেই খাঁচা নদীতে বসানোর ৬মাস গত হলেও কোন মাছের পোনা দেয়া হয়নি আজও। শ্রাবণের ভারি বর্ষণে খাঁচাগুলো ভেসে গিয়েছিল, পরে এগুলো ভাটি থেকে আবার টেনে আনা হয়েছে। আমাদের হাতে এখন একটি মাত্র কাজ,-খাঁচাগুলো টেনে আনা, আর ওগুলো পাহারা দেয়া।

এ বিষয়ে সানিয়াজান গুচ্ছগ্রামের সভাপতি আমিনুর রহমান বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৎস্য অফিসারকে বলেছি আপনারা মাছের পোনা দিতে না পারলে খাঁচাগুলো নিয়ে যান।
অযথা এগুলো দেখাশুনা করার কী দরকার আছে আমাদের? এবারের আষাঢ়-শ্রাবণে এগুলো বারবার ভেসে যাচ্ছিল। আমারা কষ্ট করে আবার এগুলো টেনে এনেছি। ওগুলো রক্ষা করার জন্য বারবার ঝুঁকি নিতে হয়েছে আমাদের।
তিনি আরও বললেন, আমাদের গুচ্ছগ্রামের এই মাছ চাষ প্রকল্পের ১৩জন সদস্যের দুইবারের প্রশিক্ষণের টাকাও দেয়নি মৎস্য অফিস।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গুচ্ছগ্রামবাসীর মত বিনিময়ের সময় আমরা ভাসমান মৎস্য চাষ প্রকল্পটির কথা বলেছিলাম। তখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৎস্য অফিসার সরব ছিলেন, তারপর থেকে নীরব হয়ে গেছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফয়সাল আজম জানালেন, আমরা একসাথে দশটি খাঁচা দেয়ার ব্যবস্থা করছি। কার্যক্রম শুরু করেছি। দ্রুত মাছের পোনা ছাড়া হবে ‘সানিয়াজান গুচ্ছগ্রাম’এর ঐ মৎস্য প্রকল্পে।