বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে শেখ হাসিনার হাতে এই চিঠি এবং মোদি সরকারের মূল্যায়ন নিয়ে লেখা মার্চিং উইথ আ বিলিয়ন বইয়ের একটি কপি তুলে দেন।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তবে চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।

ভারতীয় হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাপ্তাহিক ইন্ডিয়া টুডের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক উদয় মাহুরকারের লেখা মার্চিং উইথ আ বিলিয়ন বইটিতে মোদি সরকারের তিন বছরে অবকাঠামো, পররাষ্ট্র, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সামাজিক ক্ষেত্র, আর্থিক, কৃষি, ডিজিটাল প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে।বইটিতে পররাষ্ট্র নীতির উপর দৃষ্টিভঙ্গি অংশে বাংলাদেশকে নরেন্দ্র মোদি সরকারের অধীনে ভারতের প্রধান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা ও স্বীকৃতিরও উল্লেখ রয়েছে।দুই দেশের সীমান্ত চুক্তির সফল বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যতিক্রমধর্মী নেতৃত্ব এবং সহযোগিতার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই বইয়ে।বইটি বিশ্বের সব চেয়ে বড় গণতন্ত্রের অগ্রগতি ও অর্জনের সময়োপযোগী দর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে ভারত আঞ্চলিক উন্নয়নে চ্যাম্পিয়ন হয়ে থাকবে বলে এসময় মন্তব্য করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।সাক্ষাতে হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির বাস্তবায়ন এবং অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেন।

তিনি দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার উদ্দেশে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গতিশীল রাখতে প্রধানমন্ত্রীর উচ্চ পর্যায়ে মতবিনিময়ের প্রশংসা করেন।এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।ভারতীয় হাই কমিশনারের পর জার্মান পার্লামেন্টের সদস্য হান্স-পিটার উহি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।এসময় দুই দেশের মজবুত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন হান্স পিটার।চলতি বছর শেখ হাসিনার মিউনিখ সফরের সময় ই-পাসপোর্টের জন্য দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের কথা উল্লেখ করেন তিনি।এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এসময় আশা প্রকাশ করেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল, শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের অনুদানের চেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েসন (বিপা)সভাপতি মোহাম্মদ লতিফ খানের নেতৃত্বে সংগঠনের একটি দল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার চেক হস্তান্তর করে। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।তিনি বলেন, এসময় বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দেশে প্রতিনিয়তই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের এই চাহিদা পূরণ করতে উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে।

তার সরকারের সময়ই বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের লক্ষ্য গ্রাম কেন্দ্রিক উন্নয়ন।দ্রুত উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য পাবলিক, প্রাইভেট এবং কো-অপারেটিভকে একসাথে কাজ করতে হবে।
ভিক্ষার মানসিকতা ত্যাগ করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বসভায় আমরা সম্মান নিয়ে মাথা ঊঁচু করে দাঁড়াতে চাই।এদিন বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি শেখ কবির হোসেনের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।এসময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।