ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় জেলেদের জালে যে পরিমানে রূপালী ইলিশ ধরা পড়ছে তা সংরক্ষণ করতে পারছেন না বরফের কারণে। যার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রূপালী ইলিশ। সাগর থেকে ইলিশ মাছ ভর্তি নৌকা-ট্রলার নিয়ে আসছে উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটগুলোতে। কিন্তু সেখানে যথেষ্ট পরিমানে বরফ না থাকায় বিপাকে পড়ছেন জেলেরা। জেলার মৎস্য ঘাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, উপকূলীয় এলাকা ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় যে পরিমাণ রূপালী ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তা মৎস্য আড়ৎগুলোতে পাইকার, আড়ৎদার, জেলে ও শ্রমিকরা মাছ কেনা-বেচা করে প্যাকেটজাত করছে। অন্যদিকে, মাছ বিক্রি করা ট্রলারগুলো পুনরায় মাছ ধরতে সাগরে ছুটে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উপকূলীয় জেলে পল্লী ও আড়তে জেলেরা কিছুটা হলে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এতো কিছুর পরও জেলে, ট্রলার মালিক ও পাইকারদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে জেলেদের চাহিদা মতো বরফ উৎপাদন না হওয়ায় ট্রলার যেমন পুনরায় সাগরে যেতে হিমশিম খাচ্ছে, তেমনি পাইকাররাও মাছ কিনে বিপাকে পড়ছেন। বরফ সংকট থাকায় পাইকারদের চাহিদা মতো বরফ না পাওয়ায় মাছ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তারা। সংকট থাকায় বরফের দামও আকাশ ছোঁয়া। বিশেষ করে ভোলার চরফ্যাশনের সামরাজ, ঢালচর, বকশী, খেজুরগাছিয়া, ঘোষেরহাট, মাদ্রাজ বেড়িভাঙ্গা, বেতুয়া, হাজীরহাট, চরপাতিলা, কুকরি-মুকরি, দৌলতখানের পাতার খাল ও ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর, ইলিশা কাঠির মাথা, তুলাতুলির মৎস্য ঘাটগুলোতে দেখা দিয়েছে বরফ সংকট।বরফ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। এতে বরফ উৎপাদন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। একটি বরফ পূর্ণাঙ্গ হতে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। তারা আরো বলেন, ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলেও তা লো-ভোল্টেজের কারণে বরফ উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।ইলিশের পাইকার মোঃ আবুল হোসেন, মালেক, কামাল ও বেল্লাল হোসেন বলেন, এতদিন নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়নি। এখন কিছুটা পড়ছে। এখন আমাদের ইলিশ বেচা-কেনার জন্য বরফ বেশি প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যুতের কারণে ঠিকমত বরফ পাওয়া যাচ্ছে না। যেখানে এক পিস (ক্যান) বরফ বিক্রি হতো ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়, সেখানে এক ক্যান বরফ কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।সামরাজ ঘাটের মৎস্য আড়ৎদার আঃ জলিল ও জাহিদ বলেন, পাইকাররা মাছ কিনে চাহিদা মতো বরফ না পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকে মাছ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে এখন। জেলেরা সাধারনত দীর্ঘ সময় সমুদ্রে ও নদী এলাকায় গিয়ে মাছ আহরণ করে তাতে যে পরিমানে বরফ দেয়া হয় ফিরে আসা পর্যন্ত সেই বরফ আর থাকে না। যার ফলে ট্রলারের মধ্যেই ইলিশ মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এব্যাপারে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কেফায়েত উল্লাহ্ বলেন, বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যাগুলো হচ্ছে। আশা করছি, এই সমস্যা অল্প কয়েক দিনের মধ্যে সমাধান হবে।