আজ ১৯ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪২ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকাল ১০.০ টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন- বিএনপি নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে প্রধান বিচারপতি নাকি জনগণের একটি উপকার করেছেন, বর্তমান অবৈধ সংসদ ভেঙে দেয়া উচিত। হাফিজ সাহেবের মামা বাড়ির আবদার। এর পরে আবার আরেক কাঠি এগিয়ে গিয়ে বলবেন, আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর আয়োজন করবে। হারানো ময়ূর সিংহাসন ফিরে পাওয়ার বাস্ববায়ন করলে তাদের মামা বাড়ির আবদার ষোল কলায় পূর্ণ হয়ে যাবে। তিনি বলেন- সুপ্রীম কোর্টের রায় নিয়ে গর্তে থেকে বের হয়ে লাফালাফি করছে বিএনপি। কয়েকদিন লাফালাফি করে এখন তারা বুঝতে পেরেছে ক্ষমতার রঙ্গিন খোয়াব আবারও কার্পূরের মত উবে গেছে। তাই তারা ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে। তিনি আরও বলেন- বিদেশে বসে বিএনপি সরকারকে হটানোর ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আন্দোলন করার মুরদ নেই, আর বসে বসে; সব জানি আমরা। কোথায়, কারা কারা যাচ্ছে, কি আলাপ হচ্ছে; লন্ডনের খবর, দুবাইয়ের খবর, ব্যাংককের খবর, কি কি শলা-পরামর্শ হচ্ছে, কোন কোন পথ খোঁজা হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারকে হটানোর জন্য। এই সব খবর এই তথ্য প্রবাহের যুগে গোপন থাকে না। সব আমরা জানি। কারা কারা এ ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে সব খবর আমাদের কাছে আছে। তিনি বলেন-বিএনপি বদলায়নি। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। কারণ এবার পার্টিসিবল, ক্রেডিবর, ফ্রি এবং ফেয়ার নির্বাচন হবে। ক্রেডিবল ইলেকশনে তারা জিততে পারবে না, সেটা বিএনপি জানে এ জন্যই আবারও তারা ষড়যন্ত্র করছে। যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। এ অপশক্তিকে প্রতিরোধ, প্রতিহত করতে হবে। প্রস্তুত হয়ে যান, বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে ২০০১ সালের চেয়েও ভয়ংকর অবস্থা ফিরে আসবে। তাদের ভোট কেন্দ্রেও যাওয়ার লোক থাকে না। যদি জামায়াত না থাকতো ভোটকেন্দ্রেও বিএনপির লোক থাকতো না। জামায়াতকে নিয়ে তারা এখন পুরানো খেলায় মেতে উঠেছে। এজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন- খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক না কাটার বিষয়ে কাদের বলেন, বন্যার কারণ দেখিয়ে জনরোষের মুখে ভুয়া জন্মদিনের কেক কাটিয়ে বিএনপি কিন্তু সুযোগ পেলে তারা কেক কাটতো এবং জন্মদিনের উৎসব পালন করতো। এতে কোন সন্দেহ নাই। যারা ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিনের কেক কেটে আমাদের হৃদয়ে এবং অনুভূতিতে আঘাত করে তাদের সাথে কেন সংলাপ করবো? তারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে বিদ্বেষের চোখে দেখে। তিনি আরও বলেন- বিএনপি উত্তরাঞ্চলে কোন ত্রাণ দেয় নাই অভিযোগ করে কাদের বলেন, “দুর্গত এলাকার কোন মানুষ বলতে পারে নাই বিএনপি ত্রাণ নিয়ে কোন এলাকায় আছে। ফটোসেশন করে চলে এসে এখন ঢাকায় এসে সরকারের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছেন। তারা ঘরে বসে প্রেস ব্রিফিং করে, নালিশ করে আর কান্নাকাটি করে। রাজনীতিতে দুর্বল ও কাপুরুষের অবলম্বন হলো কান্নাকাটি।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন- মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, যোগাযোগ মন্ত্রী, আইন মন্ত্রী, এটর্নী জেনারেল এর বৈঠক স্মরণকালের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন বৈঠক দেখা যায়নি, এটা বিরল ঘটনা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল এই বৈঠককে নজির বিহীন বলে মন্তব্য করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দৌজা চৌধুরীকে রেল লাইনে দৌড়ানোর ঘটনা কি বরল না অন্যকিছু ? তিনি বলেন- প্রশ্ন তোলার অধিকার প্রতিটি মানুষের আছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক যে সব তথ্যের ভিত্তিতে রায় দিয়েছেন সঠিক মনে করি না। মূল রায় ও ভ্রমাত্মক। পর্যবেক্ষণও আরও বেশি ভ্রমাত্মক। তিনি আরও বলেন- এক ব্যক্তির দ্বারা দেশ স্বাধীন হয়নি, এই কথাটির মানে কি? কি কারণে মিমাংশিত বিষয় নিয়ে বির্তক তোলা ? স্বাধীনতা বিরোধীদের বিএনপি জামায়াতের মিথ্যাচারের প্রচারণায় ইতিহাস বিকৃতির ধারা অব্যাহত রাখা-কি সুবিবেচনার কাজ। ষোড়শ সংশোধনীর সঙ্গে এই বিষয়টির সম্পর্ক কোথায় ? হরিনাম করার নামে ভূতকে প্রমানের কোন অর্থ হয় কি ? এই তথ্যটির উদ্দোক্ততা কারা এবং কেন ? বাংলার একটা প্রবাদ আছে “দশচক্রে ভগবান ভূত”। বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের বেলায় সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি পদে বসেই ভগবান থেকে ভূতে পরিণত হয়েছিলেন। যিনি হতে পারতেন- গণতান্ত্রিক বাংলার নতুন নির্মাতা। তিনি আরও বলেন- বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, প্রাজ্ঞ বিচারপতি হয়েও সেই একই দশচক্রে পড়ে আবার ভগবান থেকে ভূত। এ কথা সত্য অবসর গ্রহণের পর ইতিহাস ও মানুষের হৃদয় থেকে একেবারে হারিয়ে যাবেন। ২০১১ সালের দৃষ্ট দশচক্রের পাল্লায় পড়ে রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির কাজে ব্যবহার হয়ে। তিনি আরও বলেন- প্রধান বিচারপতি বলেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে রাঘব বোয়ালদের বিচার হয়নি। কথাটি সত্য। আমরা একমত। আমরা বিশ্বাস করি তা একদিন হবে। সেই সঙ্গে এটাও বিশ্বাস করি প্রধান বিচারপতি যে, ‘শিবের’ গীত গেয়েছেন সেটা কি পেনড্রাইভ থেকে বেরিয়েছে- না কি-তারও চেহারা উন্মোচিত হবেই হবে। কি কারণে এ মাসে এ রায় ? তরুন প্রজন্মের দৃষ্টি আগস্ট ট্র্যাজিডি থেকে অন্যদিকে ফেরাতে চান ? এ কাজটি করা হয়েছে ঠিক আরেকটি সাধারণ নির্বাচনে আগে-কেন ?

যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মোঃ ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, মোঃ আতাউর রহমান, এডভোকেট বেলাল হোসাইন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, ইঞ্জিঃ নিখিল গুহ, শাহজাহান ভূইয়া মাখন, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, জাকির হোসেন খান, ডা. মোখলেসুজ্জামান হিরু, যুগ্ম সম্পাদক মহি উদ্দিন আহাম্মেদ মহি, মঞ্জুর আলম শাহিন, সুব্রত পাল, নাসরিন জাহান চৌধুরী শেফালী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাঃ বদিউল আলম, ফজলুল হক আতিক, আসাদুল হক আসাদ, ফারুক হোসেন তুহিন, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, শাহাদাত হোসেন তসলিম, ইকবাল মাহমুদ বাবলু, শ্যামল কুমার রায়, জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিন সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ঢাকা মহানগর উত্তর সাধারন সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।