মালদ্বীপের জাতীয় পার্লামেন্টের স্পিকারের অভিশংসন বন্ধ করতে দেশটির সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট ভবন সংসদ দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। বিরোধী দল মালদ্বিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) নেতা ইমতিয়াজ ফাহমি মঙ্গলবার টুইটারে একটি ভিডিও বার্তায় এ কথা জানান। খবর দি গার্ডিয়ানের। ভিডিওতে তিনি বলেন, সাদা পোশাকে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পার্লামেন্ট ভবন ঘেরাও করে রেখে এতে জনপ্রতিনিধিদের প্রবেশে আটকে দেয়।

এমডিপির আরেক আইনপ্রণেতা ইভা আবদুল্লাহ বলেন, পরবর্তীতে এমপিদের পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকতে দিলে তারা ভেতরে গিয়ে সেনা পরিবেষ্টিত অবস্থায় স্পিকার আবদুল্লাহ মাসীহ মোহাম্মদকে দেখতে পান। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের ঘনিষ্ঠজন স্পিকার মাসীহ তার প্রতি আনা অনাস্থা ভোট বন্ধ করতে অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বন্ধ করে দেন। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই অধিবেশনের সমাপ্তি টানা হয় বলে টেলিফোনে জানান ওই নারী এমপি।

আইন প্রণেতাদের বরাতে তিনি জানান, সরকারের কার্যক্রমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে বেশ কিছু সংসদীয় অনুরোধ জানানো হলেও স্পিকার বারবার তা প্রত্যাখ্যান করায় তার প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তারা। ইভা আবদুল্লাহ বলেন, সরকারি কোন কর্মকর্তাকে তলব করতে বিরোধী দলকে অনুমতি দেয়া হয় না। আমরা মোটেই রাষ্ট্রের কোনো অংশেরই জবাবদিহিতা চাইতে পারছি না। উল্লেখ্য, প্রায় চার লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপে ২০০৮ সালে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

এরপর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমডিপিসহ বিরোধী দলগুলোর একটি জোট গঠন করে নাশিদ দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছেন। গত মার্চে বিরোধী দলের সদস্যরা স্পিকারের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও তা খারিজ হয়ে যায়। তবে ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ করে বিরোধী সদস্যরা পার্লামেন্ট থেকে ওয়াক আউট করে। গত মাসে স্পিকারের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিশংসনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিরোধী সদস্যরা। তবে নিরাপত্তা বাহিনী পার্লামেন্টের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে এ প্রচেষ্টা রুখে দেয়। কিছু সদস্য সেনাদের ঘেরাও ভেঙে পার্লামেন্টের ভেতরে ঢুকে পড়লেও তাদের সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়।