আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঝিনাইদহ-৩ মহেশপুর-কোটচাঁদপুর আসনে বসন্তের কোকিলের মত শুরু হয়েছে নতুন মুখের আনাগোনা। দীর্ঘদিন এই দুই উপজেলার বাইরে অবস্থান করার রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীরা দলীয় মনোনয়ন নেওয়ার জন্য এলাকায় সভা সমাবেশ, দলীয় গ্র“পিং, লবিং শুরু করেছেন। এমনকি প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মারধরের ঘটনাও ঘটাচ্ছে তারা। এতে আবারো ওই আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হওয়ার আশংকা করছেন এলাকার সচেতন মহল।
জানা যায়, মহেশপুর-কোটচাঁদপুর আসনে নির্বাচনে মনোনয়ন অর্জন করাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের সাথে প্রার্থীরা গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। এলাকায় নিজের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলোচিত হয়ে উঠেছেন মহেশপুরে প্রিটী গ্র“পের পরিচালক সাবেক মহিলা এমপি পারভিন তালুকদার মায়া। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের তার স্বামীর বাড়ি হলেও তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর-কোটচাঁদপুর আসনের নির্বাচন করবেন বলে প্রচার করছেন। তিনি ইতিপুর্বে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনও করেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় “বসন্তের কোকিল” খ্যাতি পাওয়া পারভিন তালুকদার মায়া মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েক নেতার কথিক পার্টনার পরিচয় দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের পায়তারা চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ। ২০০১ সালে স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারধর করেন তিনি। এমনকি তার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ওই আসনে নির্বাচন করেন তিনি। সেইবার মাত্র ৫ হাজার ৬’শ ভোট পান তিনি। তার কারণে ওই আসনে পরাজিত হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ২০০১ সালে মহেশপুর-কোটচাঁদপুর আসনে নির্বাচন করার পর তিনি ২০০৮ সালে বাকেরগঞ্জ এলাকার সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাধারণ মানুষের কোন খোঁজ খবর নেন নি। এবারের নির্বাচনে বসন্তের কোকিলের মত মনোনয়ন পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। গত কয়েকমাস যাবত এলাকায় শুরু করেছেন লবিং, গ্র“পিং। সম্প্রতি তার রোষানলের স্বীকার হয়েছে আব্দুর সাত্তার নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। গত ৭ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নেপা ইউনিয়নের মাইলবাড়িয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তারকে হত্যার চেষ্টায় হামলা চালায় মায়া তালুকদারের সমর্থক কামরুল ইসলামের ছেলে ফারুক ব্ল্লিাহসহ অন্যান্যরা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহেশপুর উপজেলা শাখার আয়োজনে মহেশপুর থানা চত্তরের সামনে এ মানব বন্ধন পালিত হয়। তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যার চেষ্টাকারী সন্ত্রাসী ফারুক বিল্লাহ ও মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এবং এ ঘটনার ইন্ধনদাতার বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান। এছাড়াও তিনি তার লোকজন দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার পায়তারা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মহেশপুর-কোটচাঁদপুর আসন বর্তমানে আওয়ামী লীগের হাতে রয়েছে। বসন্তের কোকিলের ন্যায় নতুন মুখের এসব কর্মকান্ডে আসনটি আবারো আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হওয়ার আশংকা করছেন এলাকার সচেতন মহল। তাই এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।