মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুকি বলেছেন, গত মাসে সহিংসতার মুখে পালিয়ে যাওয়া চার লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে দেশে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসনে সহযোগিতার জন্যে তাদের পরিস্থিতি যে কোন সময় যাচাই বাছাই করতে তার সরকার প্রস্তুত রয়েছে।সকল শরণার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনার নিশ্চয়তা না দিয়ে বাংলাদেশে নজিরবিহীনভাবে পালিয়ে যাওয়াদের কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোন সময় তাদের বিষয়ে যাচাই প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছি।

মিয়ানমার নেত্রী অং সান সু কি শরণার্থী সংকট বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপকভাবে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।রোহিঙ্গা সঙ্কট প্রশ্নে আগাগোড়াই নীরব থাকার পর অবশেষে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন তিনি। রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হলেও এতোদিন এ প্রসঙ্গে কিছু না বলায় আন্তর্জাতিক মহলে তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছিলেন।এ অবস্থায় সুকি মঙ্গলবার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।সুকি ৩০ মিনিটের টেলিভিশন ভাষণে তার সমালোচকদের উদ্দেশে বলেন, আজকের বিশ্বের অভিশাপ ঘৃণা ও আতংক।আমরা চাই না মিয়ানমার এমন একটি দেশ হোক যেটি হবে ধর্মীয় ও জাতিগতভাবে বিভাজিত।সহিসংতার মুখে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের প্রতি দু:খ প্রকাশ করে সুকি বলেন, যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তার দেশ যে কোন সময়ই প্রস্তুত রয়েছে।দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী সুকি পরিস্থিতি দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রাখাইন পরিদর্শনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নেও তার সরকার কাজ করবে।উলে¬খ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর ব্যাপক দমনপীড়ন শুরু হওয়ার পর শত শত লোকের প্রাণহানি এবং দেশটি থেকে চার লাখ ১০ হাজারের বেশী রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে প্রবেশ করে। জাতিসংঘ মিয়ানমারে সংখ্যালুঘু রোহিঙ্গাদের ওপর এমন দমনপীড়নকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করে।এদিকে সু কি দেশের এ সংকট নিরসনের কথা বলে নিউইয়র্কে এ সপ্তাহের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকেন।