নদী রক্ষা করতে নদী নীতি তৈরি ও নদীতে অপরিকল্পিতভাবে স্লুইচ গেট এবং বাঁধ নির্মাণ না করার আহ্বান জানিয়েছে বিশিষ্টজনেরা। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তারা। বৃহস্পতিবাররাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নদীর অধিকার -নদীতে অধিকার’ শীর্ষক সংলাপে নদী বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, রাজনীতিবিদরা এ আহ্বান জানান অ্যাকশন এইড ও দ্যা এশিয়ান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে অন্যদের বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেইন বাদশা, ছবি বিশ্বাস, টিপু সুলতান, বাপার সাধারণ সস্পাদক ড.আব্দুল লতিফ, বুয়েটের অধ্যাপক প্রফেসর রেজাউর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া, ইনিস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান ইনামুল হক, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাড.হাসনাত করিম প্রমুখ। ফজলে হাসান বাদশা বলেন, ভারতে সঙ্গে আমাদের অবাধ বাণিজ্য চলছে। সকল নদী পথ খুলে দেওয়া হলে বাণিজ্য আরো প্রসার হবে। ৫৪টি নদী পথ উন্মুক্ত হলে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব গাঢ় হবে।তিনি বলেন, নদী রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।

ছবি বিশ্বাস বলেন, আমার অভিজ্ঞতা মতে, নদীতে স্লুইচ গেট নির্মাণ কোনো কাজে আসে না। স্লুইচ গেইট অদক্ষ পরিকল্পনার ফল। এছাড়া নদীতে যদি বাঁধ নির্মাণ করতে হয় তাহলে কৃষকের মতামত নিয়ে করা উচিত। নদী যেন সরকারের শত্রু’ উল্লেখ করে ড.আব্দুল মতিন বলেন, সরকারের বহু নীতি রয়েছে কিন্তু নদী নিয়ে কোনো নীতি নেই। নদী রক্ষায় প্রকৃতিবান্ধব একটা নীতি দরকার। হাইকোর্ট থেকে ২০০৯ সালে নদী রক্ষায় আইন হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা রয়েছে নদীকে কিভাবে রক্ষা করা যাবে। সবাই চায়, নদী রক্ষা হোক। শুধু স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনীতিবিদরা চায় না। এখানে সরকারের ত্রুটি রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী বিরোধী সংগঠন। নদী রক্ষায় স্লুইচ গেট নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। স্লুইচ গেট নদীর জন্য বিপদজ্জনক। আর একমাত্র তাদের এই ভুলের কারণে ৫০০ নদী মরে গেছে। এখনও নির্লজ্জের মতো তারা স্লুইচ গেট নির্মাণ করে যাচ্ছে। ইনামুল হক বলেন, অতি নিষ্কাশন, উত্তোলন, দখল ও দূষণ এই চারটি কারণে নদী মরে যায়। বাঁধ দেওয়া ও স্লুইচ গেট নির্মাণ নদীর উপর হস্তক্ষেপ করা। নদীর উপর এমন হস্তক্ষেপ করা হলে নদীতে আমাদের যে অধিকার তা ক্ষুণœ হবে।অ্যাড.হাসনাত করিম বলেন, বাংলাদেশে যে পানি নীতি আছে তা নদী বিরোধী। পানি নীতির কারণে নীতি আটকে আছে। শুধুমাত্র পানির ব্যবসা টিকে রাখার জন্য নদী নীতি হচ্ছে না। তবে নদী রক্ষায় নদী নীতির বিকল্প নেই।