বর্তমান আর সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণা ও মিলনমেলায় বুধবার মুখরিত হয়েছে গাজীপুরস্থিত ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এর ক্যাম্পাস। একসঙ্গে শোভাযাত্রা, নাচ, গান, আড্ডা আর নানা আয়োজনে মেতেছিলেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৪ তম বর্ষপূর্তিতে ‘ডুয়েট ডে-২০১৭’ উপলক্ষ্যে ছিল এসব উৎসবের আয়োজন। গোটা ক্যাম্পাসও সেজেছিল বর্ণিল সাজে।

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়–য়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সকালে সাদা পায়রা ও রঙিন বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ডুয়েট ডে-র শুভ উদ্বোধন করেন। এর আগে সূর্যোদয়ের সময় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

অনুষ্ঠাণের প্রধান অতিথি সম্পদ বড়–য়ার উপস্থিতিতে ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেক কাটা হয়। এরপর ‘প্রযুক্তির সর্বত্র ব্যবহার শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের অঙ্গীকার’ এই শ্লোগানকে উপজীব্য করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে পুরাতন একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এতে সকল অনুষদের ডীন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রা শেষে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সম্পদ বড়–য়া বলেন, এসডিজি অর্জনে প্রকৌশলীরাই কান্ডারী। ডুয়েটের মেধাবী প্রকৌশলীরাই দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। তিনি ডুয়েটকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় র‌্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, একটি চারা গাছ থেকে নানা সংগ্রাম-আন্দোলনের মাধ্যমে ডুয়েট আজ এই পর্যায়ে এসেছে। এখন আমরা নিরলস ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ডুয়েটকে এশিয়ার একটি অন্যতম বিদ্যাপীঠে পরিণত করবো।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. গণেশ চন্দ্র সাহা, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রাজু আহমেদ, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, ডুয়েট অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এমদাদুল হক, ডুয়েট আন্দোলনের পুরোধা ও প্রধান সমন্বয়কারী প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়–য়া, কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. মুক্তার হোসেন, ডুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউর রহমান রাতুল প্রমূখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সম্পদ বড়–য়া ও ডুয়েট আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তি প্রকৌশলী পুলক কান্তি বড়–য়াকে ক্রেস্ট উপহার দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। তিনি সুষ্ঠু ও সুশৃংঙ্খলভাবে ‘ডুয়েট ডে’ উদ্ধসঢ়;যাপনের জন্য সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞপন করে আলোচনা অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন।

এরপর ক্যাম্পাস পরিণত হয় মিলনমেলায়। ক্যাম্পাসের পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এ সময় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আর ‘ডুয়েট ডে’ উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আগামী ১৬ অক্টোবর।

উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বর ‘ডুয়েট ডে’ থাকলেও ঈদের ছুটির কারণে নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত না হয়ে তা বুধবার পালিত হয়।