রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মঙ্গলবার একতাবদ্ধ থাকতে এবং নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাব থেকে সতর্ক থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জেলার কাটিয়াদির কাটিয়াদি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জুবলি উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কালো টাকা ও পেশীশক্তি গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করে। নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশীশক্তির ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তবে তাদেরকে অবশ্যই যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায় থেকেই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে জননেতাদের দায়িত্ব রয়েছে। যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে জনগণের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ এবং স্বাধীনতা বিরোধী ও দেশ বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্র নস্যাতের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর জোর দেন। শোলাকিয়া ঈদ ময়দানকে এলাকায় গর্ব হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারী ও জঙ্গিদের একটি দল সন্ত্রাসী কার্যকলামের মাধ্যমে শোলাকিয়ার ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করতে চেয়েছিল। দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলা করতে হবে যাতে করে কোন অশুভ শক্তি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারাকে বিঘিœত করতে না পারে। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এমনটা করতে পারি, তবে আমাদের এই দেশ একদিন জাতির পিতা স্বপ্নের ‘সোনার বাংলায়’ পরিণত হবে।’

আবদুল হামিদ তাঁর সুদীর্ঘ ৬০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান অবস্থানে পৌঁছতে তাকে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বহুকিছু শিখেছি। আমি তাদের সালাম জানাই।’ আমি দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে আমার বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই।’ রাষ্ট্রপতি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের ব্যাপক ও অভূতপূর্ণ উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল।’ তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বিশ্বকে মোকাবেলা এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে কনসেপ্ট’ বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের আরো জ্ঞানী, সৎ ও নির্ভিক হওয়ার পরামর্শ দেন।
রাষ্ট্রপতি টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘সহনশীলতা, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ গণতন্ত্র বিকাশে সহায়ক।’ তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান। কাটিয়াদি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহম্মদ সুহরাব উদ্দিন এমপি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রকৌশলী রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক এমপি, কিশোরগঞ্জ জিলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, সরকারের সাবেক সচিব শফিক আলম, কাটিয়াদি উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ আইয়েনউদ্দিন, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন আহমেদ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। পরে একটি মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে আজ রাষ্ট্রপতি কাটিয়াদিতে কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।