সংখ্যালঘু ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রীকে নিয়ে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় লিটন (৩০) নামের বিবাহিত এক বখাটেকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেন স্থানীয় জনতা। পরে সেই বখাটের নামে বিয়ের প্রলোভনের অপহরণের চেষ্টায় থানায় মামলা করেন ছাত্রীর বাবা শ্রী লক্ষণ রাম। তবে অপহরণের কথা অস্বীকার করে প্রেমের সম্পর্কের সুত্র ধরে উভয়ের সম্মতিক্রমে তারা দু’জন ঘুরতে আসেন বলে দাবি করেন ঐ বখাটে। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যার পরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন ঐ ছেলেমেয়েকে আটকের ঘটনাটি ঘটে।

ঐ ইউনিয়ন পরিষদে জমাকৃত ছেলেমেয়েকে উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর উপস্থিতিতে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরল আমিন। আটক লিটন (৩০) ঐ উপজেলার ভেলাগুড়ী ইউয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ওয়াহেদ আলীর ছেলে। তার একটি ২ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। আর মেয়েটি একই ইউনিয়নের পুর্ব কাদমার (৫ নং ওয়ার্ড) এলাকার শ্রী লক্ষণ রামের মেয়ে। সে ভেলাগুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, শ্রীমতি রজনী (১৩) ভেলাগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ শ্রেণিতে লেখা পড়া করে। আজ সকাল ৯ টার সময় তার বান্ধবী পিংকি (১৩) মেয়েটিকে তার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার জন্য নিয়ে যায়। যাহা রজনীর মা শ্রীমতি রুপালী রানী (৩০) জানে।

পিংকির বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে দু’বান্ধবী মিলে নিজ বাড়িতে আসার সময় ঐ উপজেলার ভেলাগুড়ী ইউনিয়নের পুর্ব কাদমা এলাকার কাল্টুর বাজার নামক স্থান হতে আসামী লিটন রজনীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে পথচলিত অপরিচিত লোকের অটো ইজিবাইকে তুলে সিন্দুর্না ইউনিয়নে নিয়ে যায়। সে সময় মেয়ের বান্ধবী পিংকি তার নিজ বাড়িতে চলে যায়।

পরে দুপুর ২ টার সময় সিন্দুর্নার মেয়েটির বাবা শ্রী লক্ষণ রায় লোক মারফত জানতে পারে তার মেয়ে ও ঐ ছেলেকে সিন্দুর্না ইউপির লোকজন আটক করে ইউপি পরিষদে জমা দেন। অভিযুক্ত লিটন সাংবাদিককে জানান, সে ঐ ছাত্রীকে অপহরণ করেনি। তাদের মাঝে ৩ মাস যাবতকাল প্রেমের সম্পর্ক চলছে। সেই সম্পর্কের সুত্র ধরে তারা উভয়ের সম্মতি ক্রমে সিন্দুর্না ইউনিয়নে ঘুড়তে যায়। তিনি আরও জানান, ঐ ছাত্রী রজনীর বান্ধবী পিংকির বিয়ে রেজিস্টারি হয়েছে। হাতীবান্ধায় আসার সময় পিংকিও সাথে এসেছিলো। পিংকি তার হবু স্বামীর সাথে মেডিকেল মোড়ে দেখা করে। সেই সুযোগে তারা দুজনে সিন্দুর্না ইউনিয়নে ঘুড়তে যায় আর সেখানেই স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেয়।

হাতীবান্ধা থানার অফিসারস ইনচার্জ (ওসি) শামীম হাসান সরদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মেয়েটিকে তার বাবা শ্রী লক্ষণ রামের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। লিটনের নামে মেয়ের বাবা অপহরণ মামলার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আগামীকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।