নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সূচি অনুযায়ী আগামী রোববার বিএনপির প্রতিনিধিরা সংলাপে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, সংলাপের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে একটি খসড়া তৈরি হচ্ছে। এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কিছু জানাব না। শুধু এটুকু জানাচ্ছি, আমাদের প্রতিনিধিদল ১৫ তারিখ নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন।একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে পরামর্শ পেতে গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসার মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন।এরপর ১৬ ও ১৭ অগাস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ২৪ অগাস্ট থেকে শুরু হয় নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ।এবার দলগুলোকে নিবন্ধনক্রমের নিচ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সে হিসাবে বিএনপির জন্য ১২ অক্টোবর ও আওয়ামী লীগের জন্য ১৫ অক্টোবর সংলাপের তারিখ প্রস্তাব করা হয়।কিন্তু বিএনপি দলীয় কর্মসূচির কথা বলে ১৫ অক্টোবর বসতে চাইলে তাদের জন্য সেই দিনই ঠিক হয়। আর আওয়ামী লীগের অনুরোধে তাদের সংলাপের জন্য ১৮ অক্টোবর তারিখ রাখা হয়।

এ কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এই সংলাপকে বলেছিলেন আইওয়াশ। তারপরও বিএনপি সংলাপে যোগ দিতে যাচ্ছে এবং সেখানে দলটির প্রতিনিধিরা ‘নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে’ তাদের প্রস্তাব এবং দেশের রাজনীতিতে চলমান বিষয়গুলো আলোচনায় তুলবেন বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান রিজভী।জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাসচিব মির্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সংলাপে পাঠাচ্ছে বিএনপি। ওই প্রতিনিধি দলে স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য থাকবেন।

এদিকে,দলের চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে শনিবার (১৪ অক্টোবর) সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এদিন সব জেলা, মহানগরী ও রাজধানী ঢাকার প্রতিটি থানায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে।বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।রুহুল কবীর রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। বিষয়টি তার আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন এবং এ সংক্রান্ত কাগজপত্রও জমা দিয়েছেন। তারপরও আদালত খালেদার জামিন বাতিল করেছেন। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা সরকারের সর্বোচ্চ জায়গার নির্দেশে খালেদার জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, এটা জাতির বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের হুকুমেই এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর প্রমাণ হলো গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পর ছাত্রলীগ-যুবলীগের আনন্দ মিছিল। দেশে মিথ্যা মামলায় পরোয়ানা জারির হিড়িক চলছে।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আবারও ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য একটি অশুভ পরিকল্পনা করছে সরকার। আর তা বাস্তবায়ন করার জন্য জনপ্রিয় নেত্রী ও বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণ সরকারের আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে দেবে না।