পুর্ব শত্রুতার জেরে দুই সহোদরকে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। আর এসিডের দগ্ধের তীব্র যন্ত্রণায় মেডিকেলে বিছানায় ছটফট করছে ঐ দুই ভাই। শনিবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত গভীর রাতে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের চৌপতি মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন, ঐ এলাকার আবুল কালামের ছেলে ঢাকাস্থ কোম্পানী কর্মচারী ফরহাদ হোসেন (২৪) ও তার চাচাত ভাই জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে নুর হক (১৫)। নুর হক স্থানীয় গোড়ল দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্র।

স্থানীয়রা জানান, ৭/৮ বছর আগে তাদের প্রতিবেশী গজর পাটোয়ারীর মেয়ে তানজিলা আক্তার অপহরন মামলায় এজাহার নামীয় আসামী ফরহাদ হোসেন কিছু দিন হাজতবাস করেন। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে ঢাকাস্থ একটি কোম্পানীতে চাকুরী নেন ফরহাদ।

ঐ মামলায় রোববার আজ (২৩ অক্টোবর) আদালতে হাজিরা দেয়ার জন্য শনিবার রাতে বাড়ি ফিরেন ফরহাদ। এরপর চাচাত ভাই নুর হকসহ ঘুমিয়ে পড়েন। হঠাৎ ভোর রাতে দুইজন মুখোশধারী ব্যাক্তি তাদের এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।

এসময় তাদের আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে রোববার দুপুরে চিকিৎসকরা ফরহাদকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠান।

আহত ফরহাদের বাবা আবুল কালাম বলেন, মিথ্যা মামলা করে হয়রানী করে ব্যর্থ হয়ে গজর পাটোয়ারীর ছেলে সবুজ মিয়া ফরহাদকে মেরে ফেলতে এসিডে ঝলসে দিয়েছে। তিনি এর বিচার দাবি করেন। ফরহাদের বাবার সন্দেহের তীর গজর পাটোয়ারীর ছেলে সবুজের দিকেই ফেলে বলেন, এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যাবার সময় তার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলম নিজ চোখে তাকে দেখেছেন।

তবে অভিযুক্ত গজর পাটোয়ারী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ছেলে সবুজের চারিত্রিক কিছু সমস্যা থাকলেও এমন কাজ করতে পারে না।

কালীগঞ্জ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহসান হাবীব বলেন, ফরহাদের মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যাওয়ায় তাকে রংপুরে পাঠানো হয়েছে। অপরজনকে কালীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এসিড নিক্ষেপের ঘটনাটি শুনে হাসপাতালে দগ্ধদের খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।