বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির মামলায় নীলফামারীর সাংসদ মো. শওকত চৌধুরীর জামিন বহাল রাখতে ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার শর্ত দিয়েছে হাই কোর্ট।জাতীয় পার্টির এই এমপির জামিন প্রশ্নে এক বছর আগে দেওয়া রুলের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।রায়ে বলা হয়, ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা দিলে তবেই নিম্ন আদালত থেকে শওকতের পাওয়া জামিন বহাল থাকবে, তা না হলে বাতিল হয়ে যাবে।নীলফামারী-৪ আসনের সাংসদ শওকত চৌধুরীর পক্ষে আদালতে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন পঞ্চগড়-২ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। আর কমার্স ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন।

ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০১৬ সালের ৮ ও ১০ মে শওকত চৌধুরীসহ নয় জনের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় দুটি মামলা করে।এর মধ্যে এক মামলায় ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা এবং আরেক মামলায় ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।মামলার অভিযোগে বলা হয়, শওকত চৌধুরী তিনটি কোম্পানির নামে ৩৪টি এলসি খুলে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি ড. আসাদুজ্জামান, বংশাল শাখার ম্যানেজার হাবিবুল গণিসহ আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে ওই অর্থ আত্মসাৎ করেন।বর্তমানে ওই অর্থের পরিমাণ সুদে-আসলে বেড়ে ১৩৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন কমার্স ব্যাংকের আইনজীবী সারোয়ার হোসেন।তিনি বলেন, এ দুই মামলায় গত বছর অগাস্টে হাই কোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নেন শওকত চৌধুরী। পরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে আবারও জামিন পান।এ অবস্থায় ওই দুই মামলার অপর দুই আসামি আসাদুজ্জামান ও হাবিবুল গণি জামিনের আবেদন করলে গত বছর ২৪ নভেম্বর তার শুনানিতে হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে।শওকতকে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার আদালত শওকত চৌধুরীকে জামিন বাঁচানোর জন্য টাকা জমা দেওয়ার শর্ত ঠিক করে রায় দেয় বলে আইনজীবী সারোয়ার জানান।