উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ ‘পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ‘ এর অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রায় দুই কোটি টাকার অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে দুদক সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়। আনুষ্ঠানিক ভাবে মঙ্গলবার থেকে দুদক সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।

দুদক প্রধান কার্যালয়ের স্মারক নং দুদক/দর/১৫/২০১৭/পাবনা/অনু ও তদন্ত-২/৩০৮২৯, তাং ১২/১০/২০১৭ এবং রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের স্মারক নং বিকা/দর/১৫/২০১৭/পাবনা/১৬৯৩ (২), তাং ২৩/১০/২০১৭ অনুমোদনপত্রের নির্দেশে দুদক সমন্বিত পাবনা কার্যালয় এই অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।

দুদক সমন্বিত পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার অনুসন্ধানের অনুমোদর ও আদেশপত্র পাওয়ার পরপরই দুদকের কর্মকর্তারা অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছেন। এই অনুসন্ধান কার্যক্রমে পাবনা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শহীদুল আলম সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ সাইদুর রহমানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রমের সার্বিক তদারকি করবেন দুদকের উপ-পরিচালক মোঃ আবু বকর সিদ্দিক।

সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কলেজের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ, কলেজ মাঠে মাটি ভরাট, সরকারি ক্রয়ে অনিয়ম, বিধি বর্হিভূত ভাবে উন্নয়ন-সংস্কার কাজে অনিয়ম, ১৭ বছর ছাত্র সংসদের কার্যক্রম না থাকলেও ওই তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাৎ, প্রসপেক্টর, প্রশংসাপত্রের মাধ্যমে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে অর্থ আদায় ও আত্মসাৎ, কলেজের নামে বিজ্ঞানাগারে আধুনিক ও যুগোপযোগী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অর্থ আত্মসাৎ, কলেজ বাসের যন্ত্রাংশ ক্রয় ও মেরামতের নামে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ, গরীব মেধাবীদের উপ-বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খাত থেকে অর্থ লোপাটসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে অনার্স ভর্তি কমিটির আহবায়ক একেএম শওকত আলী খান প্রায় ৫ লক্ষ টাকার খরচ দেখিয়ে বিল জমা দিয়েছেন। অথচ ভর্তি পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত ওই কমিটির কোন অর্থ খরচ হয় না বলে জানা গেছে। কিন্তু ইতোমধ্যেই খরচ হিসেবে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ দেখিয়ে ভর্তি কমিটির আহবায়ক ও কলেজের অধ্যক্ষ ওই ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অধ্যক্ষের অনিয়ম, দূনীর্তি ‘টক অবদ্যা টাউনে’ পরিনত হয়েছে বেশ কিছু দিন ধরে। সব সময় নিজেকে খুব ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে প্রচার চালিয়ে বেড়ান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার। সরকারী দলের কতিপয় নেতাও তাকে রক্ষা করার জন্য বেশ কিছু দিন যাবঃ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে অবিযোগ রয়েছে। তবুও শেষ রক্ষা হলো না তার।

এদিকে পাবনার সচেতন মহলের প্রত্যাশা সুষ্ঠু ও সুচারুরুপে তদন্ত করে ১১৯ বছরের পুরাতন উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থসাৎ এর সাথে যারা জড়িত তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির জোর দাবী জানিয়েছেন।