মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিবিরে জনসংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। এমতবস্থায় এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য বস্ত্রের চাহিদার পাশাপাশি রমরমা যৌনব্যবসাও চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।

এই প্রতিবেদনে রমিদা নামের একজন নারীর সাথে কথা বলা হয় যাকে প্রথমে যৌনব্যবসার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে অস্বীকার করে। কিন্তু খানিক সময় বাদে কয়েক কাপ চায়ের পর আবার জিজ্ঞাসা করার পর সে জানালাগুলো দরজাগুলো লাগায় এবং নীরব থাকে। পরে সে মাথা নেড়ে যৌন ব্যবসার কথায় সায় দেয়। এমন আরো অনেক নারী ও কিশোরী যৌন ব্যবসায় লিপ্ত হচ্ছে বলে জানা যায়।

মেয়েটি বলে, ‘কেউ যদি এইসব কথা জানে তাহলে আমাদের মেরে ফেলবে।’ যৌনব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়া বেশিরভাগ রোহিঙ্গা নারী শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা। নূর নামের আরেকজন নারী বলেন, কুতুপালঙে প্রায় ৫০০ যৌনকর্মী আছে যারা আগে থেকেই এখানে থাকে এবং দালাল হিসাবেও কাজ করে। এখন তাদের মনোযোগ নতুনদের দিকে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তাদের কাছে নির্দিষ্ট করে বলার মত কোন তথ্য উপাত্ত নেই।

অন্তত ১০ হাজার কিশোরী ও নারী এই পেশায় যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানা গেছে, অন্য রোহিঙ্গাদের সাথে তারা দেখা করে না, শুধু বাংলাদেশীদের সাথে দেখা করে এবং মিলিত হয়। প্রত্যেক রোহিঙ্গা নারীর মনেই তাদেরকে নিয়ে কথা ছড়ানোর ভয় কাজ করে। রিনা নামের আরেকজন নারী বলেন, আমার ১৮ বছর বয়সে বিয়ে হয়। আমার স্বামী মাতাল ছিল, সে আমাকে নির্যাতন করত। তাই আমি তাকে ছেড়ে চলে আসি এবং এই ব্যবসায় নামি। রোহিঙ্গা শিবিরের এই যৌনকর্মীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির ও শিকার। এইচ আই ভি ভাইরাসের ভয় তো আছেই তার ওপর গ্রাহকরা কনডম পরিধান করতে চান না। ধর্ষিতা এবং নির্যাতিতদের জন্য একটি ‘সেইফ হাউজ’ থাকলেও রোহিঙ্গা শিবিরে কথা ছড়ানোর কারণে অনেকেই সেই সুবিধা নিতে চান না।