রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা তাদেরই সাজানো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলে থাকাকালীন স্মৃতি টেনে এনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ওই সময় সার্কিট হাউজে কক্ষ বরাদ্দ না পেয়ে নেত্রীকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়েছিলাম। মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে সফররত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইচ্ছামতো যে কোনো সার্কিট হাউজে থাকতে পারবেন। তার যাতে থাকা বা বিশ্রামে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে।

তিনি বলেন, দু’দিন আগে ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রামের ডিসি-এসপি সাহেবরা আমার কাছে জানতে চেয়েছে সার্কিট হাউজে থাকতে চেয়েছেন, এ ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত কী?‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছেন, যেই সার্কিট হাউজই তারা চায় কোনো অসুবিধা নাই, তিনি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে স্ট্যাটাস না থাকলেও সাবেক প্রধান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকে ডিজঅনার করা উচিত নয়।সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, আমি সব ডিসিদের বলে দিয়েছি, ফেনীতে থাকতে চান, যাত্রা বিরতি করবেন, নো প্রবলেম। চট্টগ্রামে থাকতে চান কোনো সমস্যা নাই। কক্সবাজারের ডিসিও জানতে চেয়েছেন সার্কিট হাউজের হিলটপে যদি থাকতে চান থাকবেন, যদি তার বহরের জায়গা সমস্যা হয় আমাদের সড়কের যে সুন্দর একটা ভবন আছে, সেখানে থাকতে পারেন। আজকেও এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, দুপুর বেলা বেগম জিয়া চকরিয়া রেস্ট হাউজে নামাজ পড়বেন, আমি বলেছি অবশ্যই। বাধা দেওয়ার কোনো বিষয় নাই। বিশ্রাম নিতে চান, লম্বা পথ, কোনো অসুবিধা নাই।তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিজেরা নিজেরা মারামারি করে বিএনপি দায় চাপাচ্ছে সরকারের ওপরৃ গতকাল তারা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার পথে শনিবার দুপুরে ফেনীতে যাত্রাবিরতি করার সূচি ছিল খালেদা জিয়ার। ফেনীতে ঢোকার আগে চৌদ্দগ্রামের সীমানায় মোহাম্মদ আলী বাজারে হামলার মুখে পড়ে তার গাড়িবহর।

খালেদা জিয়ার গাড়ি পেরিয়ে যাওয়ার পর একদল যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালালে গণমাধ্যমকর্মীদের বাহনসহ বহরের অন্তত ৩০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী মারধরের শিকার হন।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার সকালে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের বলেন, ওই হামলা যে ‘আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ অথবা যুব লীগের ক্যাডাররাই’ চালিয়েছে, এটা তাদের কাছে ‘স্পষ্ট’।হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান তিনি।কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে শনিবার চট্টগ্রামের পথে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়েছে ফেনীতে।কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে শনিবার চট্টগ্রামের পথে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়েছে ফেনীতে।পরে ঢাকায় সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রী কাদের সাংবাদিকদের সামনে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন রোহিঙ্গাদের দেখতে যাবেন এটা নিয়ে সরকারের কোনো সমস্যা নেই।তিনি প্রশ্ন রাখেন, আমরা তাকে কেন বাধা দেব?ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ফেনীতে প্রবেশের আগে চৌদ্দগ্রাম সীমান্তে হঠাৎ করে কিছু মোটরসাইকেল এসে ‘ঢিল মারা থেকে শুরু করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করে; সেখানে সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হন।আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কেন সাংবাদিকদের ওপর হামলা করতে যাবে?

কাদেরের ভাষায়, লাখ লাখ জনতার উপস্থিতি যাতে দেখানো যায়, সেজন্যই খালেদা জিয়া সড়ক পথে গাড়িবহর নিয়ে কক্সবাজারে যাচ্ছেন।কিন্তু সেটা যখন হচ্ছিল না, তখন ফেনীতে নিজের নির্বাচনী আসনের কাছে ঘটনা ঘটিয়ে দোষ দিলেন সরকারের ওপর।ওই হামলার পর ফেনীতে যাত্রাবিরতি করে শনিবার রাতে চট্টগ্রামে পৌঁছান খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি রাতে থাকেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে। রোববার সড়ক পথে কক্সবাজারে গিয়ে সোমবার উখিয়ার বালুখালী, বোয়ালমারা ও জামতলী রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে তার।