বাংলাদেশের নাগরিকরা এখন থেকে কোনও রকম ঘোষণা ছাড়াই পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার পরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা সব সময় সঙ্গে রাখতে পারবেন। এজন্য বৈদেশিক মুদ্রার ঘোষণা ফরমে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন করা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে প্রজ্ঞাপনটি পাঠানো হয়েছে।
সংশোধিত এফএমজে (ফরেন মানি অ্যান্ড জুয়েলারি) ফরমে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও ঘোষণা প্রদান ব্যতিরেকে অনধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশি নাগরিকরা সঙ্গে রাখতে পারবেন এবং বাংলাদেশ হতে বিদেশ যাওয়ার সময় সঙ্গে বহন করতে পারবেন। এতে বলা হয়, এই পরিমাণের বেশি যেকোনও অংক নিবাসী বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আগমনের ৩০ দিনের মধ্যে টাকায় ভাঙাতে হবে। অথবা প্রযোজ্য ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে জমা করতে হবে।সংশোধিত এফএমজে ফরমে বলা আছে, অনিবাসী বাংলাদেশির আনা এই ধরনের অংক বাংলাদেশে ফেরত আসবার পর যে কোনও সময় টাকায় ভাঙাতে পারবেন, অথবা বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে জমা করতে পারবেন। এফএমজে ফরমে আরও বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে এফএমজে ফরমে ঘোষণা দিয়ে যে কোনও পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে আসার সময় সঙ্গে আনা যাবে। তবে সঙ্গে করে আনা বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ অনধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার বা সমতুল্য হলে শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা প্রদান আবশ্যক হবে না। বিদেশিদের ক্ষেত্রেও ঘোষণা দিয়ে আনা সমুদয় বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঘোষণা ছাড়া আনা অনধিক পাঁচ হাজার ডলার বাংলাদেশ ত্যাগকালে অবাধে প্রত্যাবাসনযোগ্য হবে।এর আগে গত ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশি কারেন্সি বিদেশে নেওয়া যাবে। একইভাবে বিদেশ হতে বাংলাদেশে আসার সময় যে কেউ বাংলাদেশি কারেন্সি ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বহন করতে পারবেন।অবশ্য বাংলাদেশি মুদ্রার বাইরে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষাগ্রহণসহ সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণে একবারে সর্বোচ্চ নগদ পাঁচ হাজার ইউএস ডলার নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, একজন ব্যক্তি বিদেশ ভ্রমণের উদ্দেশে বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ইউএস ডলার পর্যন্ত ব্যাংক থেকে তুলতে (এনডোর্স) পারবেন। এরমধ্যে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে পাঁচ হাজার ডলার এবং সার্কের বাইরের দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য সাত হাজার ডলার পর্যন্ত তুলতে পারবেন।এক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের অনুকূলে তাদের নিজ নিজ ব্যক্তিগত ভ্রমণ বা ব্যবসায়িক ভ্রমণ কোটা বা বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ বা উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গমন বা অন্যান্য বিশেষ বা সাধারণ অনুমোদন মোতাবেক ছাড়যোগ্য বিদেশি মুদ্রা থেকে প্রতিবার ভ্রমণে যাত্রীপিছু অনধিক পাঁচ হাজার ইউএস ডলার নগদ নোট আকারে ইস্যু করা যাবে।সে ক্ষেত্রে বিদেশি মুদ্রা লেনদেন নীতিমালা ২০০৯-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় নির্দেশনা পরিপালন করার কথা বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বহির্গামী বাংলাদেশি বা বিদেশি নাগরিকদের অনুকূলে বাংলাদেশে তাদের নিজ নিজ মুদ্রা হিসাবের (প্রাইভেট ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট, রফতানিকারকের রিটেনশন কোট অ্যাকাউন্ট প্রভৃতি) অথবা রূপান্তরিত টাকা হিসাবের স্থিতি থেকে (অথবা সমমূল্য পরিমাণের বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে ব্যাক টু ব্যাক ভিত্তিতে) যাত্রীপিছু নগদ পাঁচ হাজার ইউএস ডলার ছাড় করা যাবে।