রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য অভিযুক্ত টিটু রায়কে নীলফামারী থেকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।টিটু রায়কে গ্রেপ্তার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার ঠাকুরপাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।এ সহিংসতার পিছনে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছেÑএ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এদেশে সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে বসবাস করছেন।পাগলাপীরের ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ফেইসবুকে কটূক্তি ও অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার ঘটনায় টিটু রায়ের সংশি।লষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এ ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান মন্ত্রী।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুনেছি টিটু লেখাপড়া জানেন না। তিনি নাকি আট-দশ বছর আগে থেকে বাড়ি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে থাকেনÑ পুলিশ ঘটনা তদন্ত করছে। এটা আসলে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা। এজন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেছেন, ফেইসবুকে তার দেয়া ধর্ম অবমাননার স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নিÑ এলাকায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

টিটুর মা জিতেন বালা বলেন, আমার ছেলে কোনোদিনও স্কুলে যায়নি। সে গ্রাম্য কবিরাজ। জীবিকার সন্ধানে দশ বছর আগে এলাকা ছাড়ে টিটু। তবে আমার সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার।এদিকে, রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে দেশের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন সংগঠন।হামলাকারিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শহরের ডিবি রোডে প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ দলিত মঞ্চ যশোর জেলা শাখা। মানববন্ধন থেকে হামলাকারিদের আটক ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তার দিতে রাষ্ট্রকে আরো গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানানো হয়। রাঙামাটিতে সনাতন যুব পরিষদ ও জাগো হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।প্রসঙ্গত: গত শুক্রবার টিটু রায়ের ফেসবুক স্টাটাসে ধর্ম অবমাননা নিয়ে রংপুরের পাগলাপীর সলেয়াশাহ ঠাকুরপাড়া এলাকায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে।এ সংঘর্ষে আটটি বাড়িতে আগুন ও ১৫ বাড়ি ভাঙচুর করা হয়Ñ এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লি ও এলাকাবাসির সংঘর্ষে পুলিশসহ ৪০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে হাবিব নামে এক জামাতকর্মী নিহত হন।এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানার এসআই রেজাউল করিম ও কোতোয়ালি থানায় এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। এসব মামলায় দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ১২৪ জনকে। আর জেলা প্রশাসন গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটি।