সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে সাভারের আলোচিত রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন বছরের কারাদন্ডের বিরুদ্ধে তার আপিল আবেদন গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার জামিন চেয়ে করা অন্য এক আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

বুধবার বিচারিক আদালতের বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রানার আপিল আবেদন গ্রহণ করে জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল মান্নান মোহন। এছাড়া রানার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাহানারা বেগম।পরে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আজ আদালত রানার আপিল আবেদন গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারিক আদালতে তার এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট।

মামলার নথি সূত্র জানা গেছে, রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা নিজের, তার স্ত্রী, তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের স্বনামে-বেনামে অর্জিত স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ ও দায়দেনার উৎস এবং তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী চেয়ে ২০১৩ সালের ২২ মে সম্পদ বিবরণী নোটিশ ইস্যু করে দুদক। ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপারের মাধ্যমে রানার সম্পদ বিবরণী নোটিশ পাঠানো হয়। ওই বছরের ৪ এপ্রিল রানা নিজে স্বাক্ষর করে সম্পদ বিবরণী নোটিশ গ্রহণ করেন। ২৬ এপ্রিল তা পূরণ না করেই দুদকে পাঠান। দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অপরাধে একই বছরের ২ মে কমিশনের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলাটি করেন।এরপর ২০১৬ সালের ১ জুন মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ৯ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ৮ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর চলতি বছরের ২৯ আগস্ট সাভারের রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার (নন-সাবমিশন) মামলায় তিন বছরের কারাদন্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক কেএম ইমরুল কায়েস। একইসঙ্গে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদন্ডের রায় দেন বিচারক। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আজ বুধবার হাইকোর্টে আপিল করা হলে আদালত তা গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতে রায় হওয়া এ মামলার নথি তলব করেন।