খুলনা-কলকাতা রেলপথে ২৫৩ যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করলো ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। দীর্ঘ ৫২ বছর পর এ পথে আবারও শোনা যাচ্ছে হুইসেল। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫মিনিটে খুলনা স্টেশন থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে বন্ধন এক্সপ্রেস।এর আগে সকালে কলকাতা স্টেশন থেকে যাত্রা করে দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা স্টেশনে এসে পৌঁছায় বন্ধন এক্সপ্রেস। ভারতীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৪০মিনিটে) কলকাতা থেকে যাত্রা করে ট্রেনটি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা যাত্রী হয়ে খুলনা স্টেশন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রার উদ্বোধন করেন। এ ট্রেনে করে তিনি বেনাপোল পর্যন্ত যাত্রা করবেন।যাত্রার শুরুতে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ট্রেন চালুর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে। রোগী ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে সুবিধা হবে। অসুস্থ ও বৃদ্ধদের ভিসা সহজ করা হবে। সরাসরি ট্রেন চালুর ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগও অনেকটা কমবে। শ্রিংলা বলেন, অচিরেই খুলনাতে সহকারী ভারতীয় হাইকমিশন খোলা হবে। অর্ধশতাব্দী পর এ যাত্রার সাক্ষী হতে পেরে ট্রেনের যাত্রীদের বেশ উচ্ছ্বসিত দেখেছি।খালিশপুরের বাসিন্দা সারজিনা আলম সুজানা বলেন, ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। এ রুটে ট্রেন চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষ খুব সহজে কলকাতায় যাতায়াত করতে পারবে। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, খুলনা-কলকাতা ১৭৫ কিলোমিটার এ রেলপথের বন্ধন এক্সপ্রেসে মোট ১০টি কোচ রয়েছে। এর মধ্যে ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার ২টি। বাকি ৮ টি কোচে যাত্রীরা। যেখানে ৪৫৬ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে এসি (কেবিন) ১৪৪ এবং ৩১২ টি এসি চেয়ার। যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি সিট ২ হাজার টাকা। আর এসি চেয়ার কোচের ভাড়া ধরা হয়েছে ১৫শ’ টাকা। খুলনা থেকে কলকাতায় যেতে কাস্টমস-ইমিগ্রেশনসহ প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে বন্ধনের যাত্রীদের।স্বাধীনতার আগে খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করতো। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় এই রেল যোগাযোগ। ৯ নভেম্বর বেলা সোয়া ১১টায় দিল্লি থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ঢাকা থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুইচ টিপে বন্ধন এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক যাত্রার শুভ সূচনা করেন। আর ১৬ নভেম্বর থেকে এ রুটে শুরু হচ্ছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।