বর্তমানে দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮২ শতাংশ রপ্তানি তৈরি পোশাক খাত থেকে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তৈরি পোশাক রপ্তানির এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান তিনি। তোফায়েল আহমেদ রোববার সংসদ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের লিখিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী। তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে নতুন বাজার অনুসন্ধান করা অন্যতম। তৈরি পোশাকের নতুন বাজার অনুসন্ধানে নেওয়া পদক্ষেপগুলো হলো- তৈরি পোশাক রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ ও সুসংহত করতে ব্রাজিল, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, চিলি, রাশিয়াসহ অন্য অগ্রসরমান দেশে সরকারিভাবে বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠানো। তৈরি পোশাকের বাজার সম্প্রসারণ ও সুসংহতকরণের জন্য বিদেশে বিপণন মিশন পাঠানো, একক দেশীয় বস্ত্র ও তৈরি পোশাক মেলার আয়োজন, আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন ও অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা। আঞ্চলিক বাজার আরো গভীরভাবে পর্যালোচনার সুবিধার্থে বিদেশের বাংলাদেশ মিশনগুলোতে বাণিজ্যিক উইং স্থাপন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যমান জেনেভার বাণিজ্যিক উইং সম্পসারণ, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে নতুন বাণিজ্যিক উইং স্থাপন, তৈরি পোশাক ও গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজসহ সব রপ্তানি পণ্য উন্নয়ন, ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের উপর জোর দিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বৈশ্বিক স্বীকৃতি উদযাপনে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে বিএনপি ছোট মনের পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে মন্তব্য করেছেন তাতে তিনি ছোট মনের পরিচয় দিয়েছেন।রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জও তাবাজোরা ডি. ওলিভেইলা জুনিয়র। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ ওই মন্তব্য করেন।গত শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত হয়েছে, এটা আনন্দের কথা। এ উপলক্ষে সমাবেশ করছেন, তাও আনন্দের কথা। কিন্তু সকাল থেকে দেখলাম স্কুলের বাচ্চাদের বাসে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। তারা শিক্ষকদের বলছেন, না আসলে বেতন কাটা যাবে। ব্যাংকে চিঠি দিয়েছেন কর্মচারীদের। তাদের বলা হয়েছে, সমাবেশে না আসলে ৫ দিনের বেতন কাটা যাবে। তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো রাজনীতিবিদের কাছ থেকে জাতি এমন মন্তব্য আশা করে না। রাজনীতি করতে হলে মন বড় করতে হয়। ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করলে সেই রাজনীতিতে সফলতা আসে না।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্ব যেখানে শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ ও ‘স্টার অব দ্য ইস্ট’ উপাধি দিয়েছে সেখানে বিএনপি তার সমালোচনা করছে। বিএনপি সবকিছুতেই নেতিবাচক মন্তব্য করে।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম আলমগীর বহু কষ্টে ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অথচ এই ভাষণ প্রথমে পাকিস্তান এবং পরে জিয়া ও খালেদা জিয়া ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন। তারাই এই ভাষণ বাজাতে দেননি, মাইক কেড়ে নিয়েছিলেন। ওই জনসভায় ২০ লাখ লোকের সমাগম হয়েছিল। যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ওই জনসভার বক্তব্য ছিল অলিখিত। বিশ্বের আর কোনও জনসভার ভাষণ অলিখিত ছিল না। কাজেই সবকিছুতেই সমালোচনা করা বিএনপির অভ্যাস।