রংপুরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হয়েছে,তা সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে রোববার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা এই আশার কথা বলেন। এ সময় অন্য চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে নুরুল হুদা বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করণীয়, তার সবকিছুই করা হবে।সিইসি বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী সমান সুযোগ পাবেন। ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। প্রার্থীরা যাতে কাজ করতে পারেন, সে পরিবেশ তৈরি করা হবে।এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সেনা মোতায়েন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। কেউ এ বিষয়ে প্রস্তাবও দেয়নি।আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেন নুরুল হুদা।

সিইসি জানান, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, আনসার মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে তিন হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে। ১৯৩টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২২ জন করে সশস্ত্র সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র থাকবে ২৪ জন করে সদস্য।সিইসি জানান, পুলিশ-এপিবিএনের সমন্বয়ে ৩৩টি, র‌্যাবের ৩৩টি ও বিজিবির ৩৩ টহল দল নির্বাচনের মাঠে থাকবে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কিছু দেখছেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরির পাশাপাশি ভোটারদের জন্য নির্বিঘেœ ভোট দেওয়ার সব ব্যবস্থাই তারা নিচ্ছেন। কে এম নূরুল হুদা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারে এবং সব প্রার্থী যাতে তাদের নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারেন- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি বলেছে, আগামী বছরের শেষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রংপুর সিটি নির্বাচনকে তারা দেখছে ইসির জন্যে এসিড টেস্ট হিসেবে।বিএনপির প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবে ইসি- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, কারও প্রত্যাশা পূরণ নয়, আমরা অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। এখানে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। এখানে বিএনপিসহ অন্য দলের আশঙ্কার কিছু নেই।ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে নূরুল হুদা বলেন,সংখ্যালঘুরা যাতে নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সব ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রংপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।সিইসি জানান, আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি ভোটের নিরাপত্তায় রংপুরে নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে তিন হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত থাকবে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা সদস্য থাকবে।৩৩টি সাধারণ ও ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রতিটিতে পুলিশ, আনসার ভিডিপি, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সদস্যদের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে একটি করে; নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগ দেওয়া হবে ভোটের প্রচার শুরুর পর থেকেই।

সিইসি ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন ভবনের এই সংবাদ সম্মেলনে। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা পর্যায়ের প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইসির সম্মেলন কক্ষে বৈঠকে অংশ নেন।