চট্টগ্রাম পর্বে এসেও জয়ের ধারা ধরে রাখলো খুলনা টাইটানস। রংপুর রাইডার্সকে শুক্রবার ৯ রানে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়দের দল। এর ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পৌঁছে গেলো খুলনা।

১৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে টানা তিন বলে দুটি চার এবং একটি ছক্কা মেরে খুলনা টাইটানসকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। তবে তৃতীয় ওভারে প্রতিশোধ নিতে দেরি করেননি আবু জায়েদ রাহী। এই তরুণ পেসারের অফস্টাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ১৬ রান করেন গেইল। তার আগের ওভারে আফিফ হোসেনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েন আরেক আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (২)। পঞ্চম ওভারে আবার খুলনা টাইটানসের সাফল্য। ব্র্যাথওয়েটের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে গেছেন মোহাম্মদ মিঠুন (৩)। বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে ১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫ ওভারে ৩০ রান করতেই ৩ উইকেট হারায় রংপুর। এরপর আবারও আফিফ হোসেনের বলে বোল্ড হন ফজলে মাহমুদ। ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া রংপুরকে এরপরেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে চেষ্টা করেছিলেন রবি বোপারা ও নাহিদুল ইসলাম। দুজনেই হাঁকান হাফসেঞ্চুরি। তাদের ব্যাটে ভর করেই এক পর্যায়ে শেষ ওভারে ১৪৫ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল রংপুর। কিন্তু খুলনার বোলিং আক্রমণে পাল্টা থাবা আর দেওয়ার শক্তি পায়নি তারা। এই ওভারেই ফেরেন নাহিদুল (৫৮) ও রবি বোপারা (৫৯)। নাহিদুল রান আউট হলে রবি বোপারাকে আফিফের ক্যাচ বানান জুনায়েদ। বোপারার ৪৪ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও একটি ছয়। আবার নাহিদুলের ৪৩ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৪৯ রান তুলতে পারে রংপুর রাইডার্স।খুলনার পক্ষে ২ ওভারে ৪ রান দিয়ে একাই দুই উইকেট নেন আফিফ। একটি করে নেন জুনায়েদ ও আবু জায়েদ। ম্যাচ সেরা হন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এর আগে রংপুর রাইডার্সের বোলারদের ওপর রীতিমত তা-ব চালিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। খুলনা টাইটানস ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে একা লড়ে গেছেন তিনি। সত্যিকার অধিনায়কের মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ৩৬ বলে খেলেছেন ৫৯ রানের অসাধারণ ইনিংস। তার এই ইনিংসের ওপরে ভর করে খুলনা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়েছে করেছে ১৫৮ রান।টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার শুরুটা ভালো ছিল না। আক্রমণাত্মক মেজাজে শুরু করা রাইলি রোসো চার-ছক্কায় চট্টগ্রামের দর্শকদের মাতালেও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। সোহাগ গাজীর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪ বলে করেন ১১ রান। খানিকপর ৯ রান করা আফিফকে বোল্ড করেন রুবেল। নাজমুল হোসেন শান্তও টিকতে পারেননি। ভালো ইনিংসের ইঙ্গিত দিলেও এই ব্যাটসম্যান ফেরেন ২০ বলে ২০ রান করে।

এরপর নিকোলাস পুরানকে সঙ্গী করে খুলনাকে চাপ থেকে টেনে তোলেন মাহমুদউল্লাহ। পুরান ২০ বলে ১৬ রান করে আউট হলেও মাহমুদউল্লাহ এগিয়ে নেন দলকে।ম্যাককালামের চতুরতায় থেমেছে মাহমুদউল্লাহ ইনিংস। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে খুলনা টাইটাইনসকে পথে ফেরানো এই ব্যাটসম্যান ডিপ মিডউইকেটে নাহিদুল ইসলামের হাতে ধরা পড়লেও পুরো কৃতিত্বটা ম্যাককালামের। কিউই তারকা বল তালুবন্দি করে সীমানা পেরিয়ে যাচ্ছিলেন দেখে বলটা শূন্যে ছুড়ে মারেন, সামনেই থাকা নাহিদুলের ক্যাচটা লুফে নিতে কোনও অসুবিধাই হয়নি।

অসাধারণ এই ক্যাচের আগে মাহমুদউল্লাহ ব্যাটে চালিয়েছেন তান্ডব। হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে ৩৬ বলে খেলেছেন ৫৯ রানের ইনিংস। যাতে ছিল ৬টি চার ও দুটি ছক্কার মার।