ফেনীর সোনাগাজীতে সড়কের পাশের বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ লুট হয়ে গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও বন বিভাগের উদাসীনতা এবং কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণে এই হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে উপকারভোগীরা আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বন বিভাগ, এলাকাবাসী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে সোনাগাজী হয়ে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে কাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে পরিপূর্ণ কাজ সম্পাদনের কথা রয়েছে। ফেনীর অংশের সাহেবের ঘাট থেকে মুহুরী প্রজেক্ট পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সড়কটির দু’পাশে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ ছিল। সড়কটির দু’পাশ বর্ধিত করার কারণে গাছগুলো কাটতে হবে এই মর্মে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বিধি মোতাবেক দরপত্র আহবান করার জন্য চিঠি পাঠান। এছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বন বিভাগকেও চিঠি পাঠান।বন বিভাগের দাবি- ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে সড়কের দু’পাশে গাছ গুলো লাগিয়েছেন অধুনালুপ্ত এনজিও সেবা ও আশা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গাছগুলো হরিলুট হয়ে গেছে। বন বিভাগের উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র ভৌমিক জানান, গাছগুলো লাগিয়েছেন অধুনালুপ্ত এনজিও। দরপত্র আহবান করার কথা ছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিন্তু বন বিভাগের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় লিখিতভাবে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারি মো. কামাল উদ্দিন দাবি করেন অধুনালুপ্ত এনজিওর লাগানো গাছের একটি অংশের মালিক সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, এনজিও কর্তৃপক্ষ (যদি থাকে), উপকারভোগী জনগণ। নিলামে না দেয়ার ব্যাপারে তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করতে বলেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফেনীর নির্বাহী প্রকোশলী মাসুদুল করিম জানান, গাছগুলোর মালিক ছিল এনজিও তাই আমরা নিলাম দিতে পারি নাই।এদিকে সড়কের দু’পাশের গাছগুলো এলাকার প্রভাবশালী মহল, বাড়ি সংলগ্ন যার-যার জায়গার মুখ অনুযায়ী, স’মিল মালিক জয়নাল আবেদীন কোম্পানী, এছাড়া কিছু বখাটে চোর এসব গাছ হরিলুট করে নিয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। কমদামী অনেকটা অকার্যকর, বাঁকা ও অপ্রয়োজনীয় গাছগুলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্কেভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলে রেখেছে। সেগুলোর ডাল-পালাও প্রভাবশালীরা লুট করে নিয়ে গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোক জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারি মো. কামাল উদ্দিন তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে অনেকগুলো গাছ সোনাগাজীর বিভিন্ন স’মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এসব সরকারি গাছ লুটের ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদাসীনতাকেই দায়ী করে বলেন, আমি গাছগুলো নিলাম দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত চিঠি দিয়েছি কিন্তু তারা কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।