আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার ইকোনমিক করিডোর নির্মাণের জন্য মিয়ানমারকে সহযোগিতা করতে রাজী করানোর জন্য চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন।তিনি বৃহস্পতিবারদুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের সুরমা হলে সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ সহযোগিতা চান।

আওয়ামী লীগের আমন্ত্রনে চীনের এ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে তিন দিনের সরকারী সফরে রয়েছে। চীনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী মন্ত্রী ওয়াং ইয়াজুনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, চীনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মহাপরিচালক জাং সুয়ে, পরিচালক হু জিয়াওদং, তান উই ও মি এবং ফু উইরাং।ওবায়দুল কাদের বলেন,বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার (বিসিআইএম) ইকোনমিক করিডোর বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের দু’কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। এ রাস্তা নির্মানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আগ্রহী। ন্তিু‘ এ রাস্তা নির্মানের জন্য মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা দরকার। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার এ সহযোগিতা করছে না। বাংলাদেশ এ বিষয়ে চীনের সহযোগিতা চায়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের সময় গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কয়েক দিন বেশি যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে হয়েছে। একই সময়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা ইনফ্লাক্সকে মোকাবেলা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে দেশে থাকতে হয়।তিনি বলেন, তাই ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও আমি চীনে সফর করা আওয়ামী লীগের দু’টি সফরে অংশ গ্রহন করতে পারি নি। সমুদ্র ও পাহাড় সকলকেই আলোড়িত করে। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে আমি যেতে পারিনি।কাদের বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে, আমরা এক চীন নীতির সম্পূর্ণ পক্ষে। তিব্বত ও তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।ওবায়দুল কাদের একটি ভালো সময় দেখে চীন সফরে যাওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেন এবং বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের চীন সফরে সে দেশের আথিতিয়েতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাম্বেসেডর মোহাম্মদ জমির, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্ণেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়-য়া ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের দেশের যোগাযোগ ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতার ব্যাপক প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে চীন সবচেয়ে বড় অংশীদার।তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্প। এটা জাতির স্বপ্নের সেতু। বিশ্ব ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার পর অনেকে ভেবেছিল এ সেতু নির্মিত হবে না। এ সেতু নির্মাণ করার সঙ্গে সাহস এবং সামর্থের বিষয় জড়িত ছিল। কারণ প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর বিশ্বের বৃহত্তম সেতুগুলোর মধ্যে অন্যতম সেতুটি নির্মিত হবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছিল।তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল জল্পনা কল্পনার অবসান করে সাহসিকতার সঙ্গে নিজস্ব অর্থায়নে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করার প্রকল্প গ্রহন করেন। চীনের চায়না মেজর ব্রীজ এবং চায়না সিনো হাইড্রো কোম্পানী এ সেতু নির্মানের কাজ পায়।কাদের বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি যে স্পেয়ারের ওপর স্প্যান স্থাপন করেছি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তবতা।তিনি বলেন, ৮ম চায়না ব্রীজ নির্মানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৯ম চায়না ব্রীজ নির্মানে চীনের সহযোগিতা পেতে যা”িছ। এ ব্রীজ দেশের উন্নয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক দেশের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু দেশের যোগাযোগ ব্যব¯স্ধর উন্নয়নে চীনের মতো আর কোন দেশ এগিয়ে আসে নি।তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফূলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য চায়নিজ এক্সিম ব্যাংক অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণে ইতোমধ্যে চীনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।তিনি আরো বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যেভাবে দৃঢ় হচ্ছে তাতে অচীরেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পার্টি টু পার্টি সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হয়ে বাংলীদেশী জনগনের সঙ্গে চীনা জনগনের সম্পর্ক গড়ে উঠবে।