নির্বাচন কমিশন পেছনের দরজা দিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জেতানোর চেষ্টা করলে জনগণ সেটার উপযুক্ত জবাব দেবে, বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, রংপুর সিটি নির্বাচনে সব প্রার্থীর সমান সুযোগ তৈরি হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে ভোটাররা এখনো ভয়ভীতির মধ্যেই রয়েছেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কি না, এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভীর অভিযোগ, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও ইসি (নির্বাচন কমিশন) তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সেখানে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ এখনো করতে পারেনি ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের মানসিকতা স্বাধীন না হলে কমিশনের আইনি স্বাধীনতা কোনো কাজে আসে না। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জোর দাবি জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও জোর দাবি জানানো হচ্ছে।রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, ১৯৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ। ইসি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বারবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও ইসি তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা গোটা এলাকায় ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে বলেও প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে বিএনপি-মনোনীত প্রার্থীকে শুরু থেকে যেভাবে হয়রানি করা হয়েছে, তাও নজিরবিহীন। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে পেছনের দরজা দিয়ে জেতানোর কোনো চেষ্টা করলে জনগণ সেটির উপযুক্ত জবাব দেবে।রিজভী আরও বলেন, বেসিক ব্যাংকে দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির বিষয়টি জনসমক্ষে স্পষ্ট হয়ে উঠলেও ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা জড়িত থাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবরই সেটি এড়িয়ে গেছে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৭টি মামলা হলেও মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশে এখন নতুন করে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে দুদক। তিনি বলেন, ব্যাংক লুটের লাখ লাখ কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে গেলেও দুদক এসব বিষয়ে নির্বিকার। কিন্তু জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না। লুটেরাদের একদিন জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।দেশে গুম-আতঙ্ক থামছে না দাবি করে রিজভী বলেন, সারা দেশে নিখোঁজ বেআইনি গুম-আতঙ্ক থামছেই না। সমাজের কোনো স্তরের মানুষই আজ নিরাপদ নয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অনেক মানুষের আর খোঁজ মিলছে না।