প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে যান্ত্রিক ত্র“টির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি প্রকৌশলী দেবেশ চৌধুরীসহ ১০ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণপূর্বক আসামিরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ জামিন মঞ্জুর করেন।বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মনিরুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রকৌশলী নাজমুল হক হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন।এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে নিয়োজিত বিমানটির ওয়েল প্রেসার সেন্সারের পরিবর্তনের কাজটি করেন সিদ্দিকুর রহমান। সহযোগিতা করেন মেকানিক শাহ আলম। ওই সময় প্রকৌশলী নাজমুল হক পরীক্ষার (লিকচেক) জন্য তিনবার ভেতরে (পউল) প্রবেশ করেন। তবে তিনি তদন্ত কমিটির কাছে একবার ভেতরে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। ফলে নাজমুল হকের আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। তবে তদন্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং ঘটনার পারিপাশ্বিকতায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ঘটনায় নাশকতা, আতœঘাতি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের কোনও উপাদান পাওয়া যায়নি।২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭ বিমানে যান্ত্রিক ত্র“টি দেখা দেয়। এ সময় তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাদে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। পরে অন্য একটি বিমান পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে পৌঁছানো হয়। পরে ত্রুটি সারিয়ে ওই উড়োজাহাজটিও হাঙ্গেরি পাঠানো হয়। এই ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর রাতে বিমান বন্দর থানায় ৯জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন (মামলা নম্বর ২৩) বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটারিয়াল ম্যানেজমেন্ট) উইং কমান্ডার (অব.) এমএম আসাদুজ্জামান। এর আগে এই ৯ জনকে বিমানের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সাত জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- বিমানের চিফ ইঞ্জিনিয়ার ( প্রোডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) এস এ সিদ্দিক, প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (এমসিসি) বিল্লাল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার লুৎফর রহমান, সামিউল হক, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস ও জাকির হোসাইন। পরে এ মামলায় বিমানের মোট ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে।